সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গুজরাটের (Gujarat Assembly Election) মুসলিম ভোটাররা দীর্ঘদিন ধরে চোখ বন্ধ করে কংগ্রেসকে ভরসা করে এসেছেন। বিশেষ করে ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গার পর। নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সেসময়ও মুসলিম অধ্যুষিত আসনগুলিতে মূলত কংগ্রেসের আধিপত্য ছিল। কিন্তু এবারের নির্বাচনে ঐতিহাসিক ভাবে মুসলিম অধ্যুষিত আসনেরও বেশিরভাগ দখল করল বিজেপিই।
গুজরাটের ১৭টি আসনে কমবেশি সংখ্যালঘুদের প্রভাব রয়েছে। এই আসনগুলিতে মোটামুটিভাবে ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত মুসলিম ভোটার রয়েছেন। ২০১৭ বিধানসভা নির্বাচনে এই আসনগুলির মধ্যে ১২টি পেয়েছিল কংগ্রেস (Congress)। আর বিজেপি পেয়েছিল মোটে ৬টি। বিলকিস বানোর (Bilkis Bano) ধর্ষকদের মুক্তির পর মুসলিম সমাজে যথেষ্ট ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। কংগ্রেসের আশা ছিল, সেই ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে তারা আগের বারের থেকেও বেশি আসন পাবে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, আগেরবারের তুলনায় মুসলিম অধ্যুষিত কেন্দ্রগুলিতে কংগ্রেসের আসনসংখ্যা অর্ধেকেরও কম হয়ে গিয়েছে। এই ১৭টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র ৫টি। আর বিজেপি (BJP) পেয়েছে ১২টি আসন। আগের বারের থেকে দ্বিগুণ।
[আরও পড়ুন: বিজেপিতে গিয়ে জয় হার্দিকের, হার কংগ্রেসের জিগনেশের! কী হল বাকি হেভিওয়েটদের?]
কেন এই ফল? স্থানীয়রা বলছেন, আপ এবং AIMIM ভোট কাটুয়ার ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ায় ভাল ধাক্কা খেয়েছে কংগ্রেস। আসাদউদ্দিন ওয়েইসির (Asaduddin Owaisi) এআইএমআইএম এবারের নির্বাচনে ১৪টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। এর মধ্যে ১২ জন মুসলিম। আর আম আদমি পার্টি (Aam Aadmi Party) মুসলিম অধ্যুষিত সবকটি আসনেই প্রার্থী দিয়েছিল। কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, এই দুই দল মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় ৭-৮ শতাংশ ভোট কেটে গিয়েছে। যার ফলে সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খেয়েছে কংগ্রেস। স্থানীয় কংগ্রেস নেতারা বলছেন, ভোট কাটুয়া পার্টি না এলে মুসলিম অধ্যুষিত আসনগুলি তাঁরাই দখলে রাখতে পারতেন। যদিও ওয়াকিবহাল মহল বলছে, বিলকিসের ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া এবং তারপর মুসলিমদের অসন্তোষ মুসলিম অধ্যুষিত আসনগুলিতে হিন্দু ভোটারদের একত্রিত করে দিয়েছে। সেটাও বড় ফ্যাক্টর হয়েছে নির্বাচনে।
[আরও পড়ুন: দোষ কি শুধু আপের? গুজরাটে কংগ্রেসের ভরাডুবির আসল কারণ কী কী?]
উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে, গুজরাট দাঙ্গার কেন্দ্রস্থল গোধরা এবং নারোড়া পাটিয়া দুটি কেন্দ্রেই জয়ী হয়েছে বিজেপি। কংগ্রেসের হেভিওয়েট নেতা জিগনেশ মেবানির বদগাম আসনেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। যদিও বিজেপির দাবি, তাঁদের সবকা বিকাশের নীতি সংখ্যালঘুদেরও মন জিততে পেরেছে।