সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চোখের সামনে ছটফট করে মেয়েটা। প্রতিদিন একটু একটু করে ওর শারীরিক অবনতির সাক্ষী থাকতে হয় মা-বাবাকে। নিজের লিভার দিয়ে সন্তানকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে চান মা। কিন্তু হাত-পা বাঁধা। পকেট যে একেবারেই শূন্য। তাই কান্নাই নিত্যদিনের সঙ্গী অনুশাদেবীর। আর সেই কারণেই তিনি আপনাদের কাছে আর্থিক সাহায্যের আরজি জানাচ্ছেন। আপনারাই পারেন যথাসাধ্য সাহায্য করে ৮ বছরের কিরণময়ীকে কঠিন যন্ত্রণা থেকে মুক্ত করতে। এক মায়ের চোখের জল মুছতে।
অনুদানের বিষয়ে বিষদ জানতে এই লিংকে ক্লিক করুন
জন্মের পর থেকে সুস্থ-স্বাভাবিকই ছিল কিরণময়ী। ঘটনার সূত্রপাত ২০১৯ সালে। একটু একটু করে ওজন কমতে শুরু করে খুদের। ত্বক ফ্যাকাসে হতে থাকে। খাওয়া-দাওয়াও ঠিকমতো করতে পারত না। রাতের পর রাত জেগে থাকত। স্বাভাবিকভাবেই শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমতে থাকে। চিকিৎসকরা দ্রুত রক্ত দেওয়ার ব্যবস্থা করতে বলেন। সেই সময়ে নিয়মিত মেডিকেশন করায় পরিস্থিতি খানিকটা স্বাভাবিক হলেও তা অবশ্য বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। বরং দিন কয়েক পর আরও করুণ অবস্থা হয় খুদের। পেটে তীব্র যন্ত্রণা শুরু হয়। বমি দিয়ে রক্ত বেরতে থাকে কিরণময়ীর। “ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। সঙ্গে সঙ্গে মেয়েকে নিয়ে যশোদা হাসপাতালে ছুটে যাই। ডাক্তাররা কয়েকটা টেস্ট করে জানান, যত দ্রুত সম্ভব লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করতে হবে।” সেই ভয়ংকর দিনের কথা বলতে গিয়ে ডুকরে কেঁদে ওঠেন অনুশা। চিকিৎসকদের কথা শুনে চোখের সামনের সবকিছু আবছা হয়ে গিয়েছিল। এতটুকু বয়সে কেন এত কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে কিরণময়ীকে? ঈশ্বরের কাছে প্রশ্ন করেছিলেন তিনি।
এরপর মেয়েকে নিয়ে একাধিক হাসপাতালে দৌড়েছেন স্বামী-স্ত্রী। শেষে কিরণময়ীকে কেয়ার হাসপাতালে ভরতি করেন অনুশা ও অমরনাথ। চিকিৎসকরা বাচ্চা মেয়েটিকে সুস্থ করে তোলার সমস্ত প্রক্রিয়া বিস্তারিত জানান তাঁদের। বলেন, লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য প্রথমেই প্রয়োজন একটি লিভারের যা কিরণময়ীর সঙ্গে ম্যাচ করবে। এরপর হবে অস্ত্রোপচার। যাতে খরচ ২২ লক্ষ টাকা। ডাক্তারদের মুখ থেকে অর্থের পরিমাণ শুনে আকাশ থেকেই পড়েছিলেন দম্পতি। দুধ বিক্রেতা হয়ে কোথা থেকে এত টাকা জোগাড় করবেন অমরনাথ? ভেবে কূল পাননি। মাসিক আয় তো মোটে ৭ হাজার টাকা। তবে কি মেয়েকে সুস্থ করে তোলা যাবে না? বাবা-মা হয়ে কীভাবে বিনা চিকিৎসায় কষ্ট পেতে দেখবেন মেয়েকে! তাই কিরণময়ীর অভিভাবকরা ঠিক করেন, সঞ্চিত অর্থ চিকিৎসায় খরচ করা হবে। সৌভাগ্যক্রমে অনুশার লিভার ম্যাচ করে যায় মেয়ের সঙ্গে। ফলে লিভার জোগাড়ের সমস্যা মেটে। কিন্তু তাঁদের সঞ্চিত অর্থও যে চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট নয়! তাই এখনও লিভার ট্রান্সপ্লান্টের প্রক্রিয়া আটকে।
অনুদানের বিষয়ে বিষদ জানতে এই লিংকে ক্লিক করুন
প্রতিদিন মেয়ের বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করা অমরনাথ বলছিলেন, “এক বছর ধরে আমার মেয়েটা ভুগছে। ওকে সব যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে চাই। মেয়ের আগের সেই হাসিটা দেখতে চাই আবার। এভাবে ওকে কষ্ট পেতে দেখতে আর ইচ্ছে করে না।” নিজের লিভার দিয়ে মেয়েকে সুস্থ করতে তৈরি মা। কিন্তু বাদ সাধছে টাকা। তাই দম্পতির কাতর আবেদন, এই কঠিন সময়ে তাঁদের মেয়ের চিকিৎসার জন্য যেন হাত বাড়িয়ে দেন সবাই। সাধ্যমতো আর্থিক অনুদান করুন, যাতে মেয়ের লিভার প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়। সকলের প্রয়াসে একটি ছোট্ট প্রাণ জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ খুঁজে পেলে, এর চেয়ে বেশি শান্তির আর কী-ই বা হবে।
কিরণময়ীর অসুস্থতা এবং তার চিকিৎসার জন্য খরচের বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে একটি মেডিক্যাল দল। এই সংক্রান্ত সমস্ত নথিপত্রও রয়েছে। অনুদানের আগে আপনিও চাইলে তা যাচাই করে দেখতে পারেন। কিংবা মেডিক্যাল টিমের আয়োজকের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন।
চ্যারিটি নম্বর: 81687201
বিঃ দ্রঃ- এই অনুদান 80G, 501(c) ইত্যাদি কর ছাড়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।