সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গণতান্ত্রিক সরকার উপড়ে ফেলে মায়ানমারের (Myanmar) দখল নিয়েছে সেনাবাহিনী। বন্দি জনপ্রিয় নেত্রী আং সাং সু কি ও তাঁর বিশ্বস্ত সহযোগীরা। সেনার স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন হাজার হাজার গণতন্ত্রকামী মানুষ। বাড়ছে আন্তর্জাতিক চাপ। এই পরিস্থিতিতে টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে দেশের মানুষের উদ্দেশে বার্তা দিলেন মায়ানমারের সেনাপ্রধান মিন আং লাং। জানিয়ে দিলেন, তাঁরা ক্ষমতা ধরে রাখতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটাননি। বরং শিগগিরি সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করে বিজয়ীর হাতেই ছেড়ে দেবেন দেশের শাসনভার। তবে ঠিক কবে এই নির্বাচন হবে সে সম্পর্কে তিনি কিছু বলেননি।
দেশে নতুন করে সেনা অভ্যুত্থানের পরে এই প্রথম জনতার উদ্দেশে বার্তা দিতে দেখা গেল সেনাপ্রধানকে। পাশাপাশি, এই প্রথম প্রকাশ্যেও এলেন তিনি। তাঁর দাবি, গত নভেম্বরে যে নির্বাচন হয়েছিল তাতে সু কি’র (Aung San Suu Kyi) দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি বা এনএলডি ((NLD)) কারচুপি করে জিতেছিল। এমন দাবি অবশ্য জুন্টা (Junta) আগেও করেছে। এদিকে দেশজুড়ে বাড়ছে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের ঢেউ। ৩০টি শহরে ইতিমধ্যেই জারি হয়েছে কারফিউ। পাঁচ বা তার বেশি মানুষের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কিন্তু কারফিউ জারি করেও দমিয়ে রাখা যায়নি জনবিক্ষোভ। পথে নেমে পড়েছেন আন্দোলনকারীরা। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক স্তরেও চাপ ক্রমেই বাড়ছে। সব মিলিয়ে কিছুটা একঘরে বার্মিজ সেনা।
[আরও পড়ুন: সেনার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে একমনে নাচে মগ্ন মায়ানমারের সাহসিনী! ভাইরাল ভিডিও]
স্বাধীনতার সময় থেকেই মায়ানমারের শাসনব্যবস্থা নিয়ে অস্বচ্ছতা ছিল। প্রথম কয়েক বছরের নামমাত্র গণতন্ত্রের পরে ১৯৬২ সালে পাকাপাকি ভাবে সেনা শাসন শুরু হয় সেদেশে। পরবর্তী ৪৯ বছর নানা প্রতিবাদ-আন্দোলন সত্ত্বেও সেনা শাসনই জারি ছিল। ২০১১ সালে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হওয়া ভোটে ক্ষমতায় আসেন সু কি। কিন্তু ফের পরিস্থিতি বদলে যায় গত সপ্তাহের সোমবার। মায়ানমারের দখল নেয় সর্বশক্তিমান ‘জুন্টা’। সামরিক বাহিনীর হাতে বন্দি হন নোবেলজয়ী রাষ্ট্রপ্রধান আং সান সু কি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট-সহ অনেকেই। সেনা জানায়, আপাতত এক বছরের জন্য ক্ষমতা দখল করেছে তারা।