সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রোম যখন পুড়ছিল, তখন সম্রাট নিরো বেহালা বাজাচ্ছিলেন। অতি বিখ্যাত এই মিথকে ফের মনে করাল মায়ানমার (Myanmar)। গত শনিবার একদিনে অন্তত ১১৪ জন মানুষকে গুলি করে মেরেছে সেদেশের সেনা। মৃতদের মধ্যে একটা বড় অংশ ছিল নাবালকরা। এই ভয়াবহ ঘটনার পরেই রাতে এক রাজকীয় নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন জুন্টা (Junta) প্রধান মিন আং লেইং! ওইদিন ছিল ‘আর্মড ফোর্সেস ডে’। সেই উপলক্ষেই আয়োজিত হয়েছিল ওই পার্টি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে ওই পার্টির নানা ছবি। যাতে দেখা গিয়েছে রেড কার্পেটের উপর দিয়ে হেঁটে পার্টিতে যোগ দিতে আসা সেনানায়কদের পরনে বো-টাই, পদক খচিত জ্যাকেট। যেদিন সেনার গুলিবৃষ্টি এমন নারকীয় হত্যালীলা ঘটেছিল, সেদিনই এই জৌলুসময় পার্টির আয়োজন দেখে হতভম্ব নেটিজেনরা।
[আরও পড়ুন: ‘এখনও মিস করেন আমায়?’, বিয়েবাড়িতে আমন্ত্রিতদের প্রশ্ন অভিমানী ট্রাম্পের]
উল্লেখ্য, ১ ফেব্রুয়ারি আচমকাই দেশের শাসনক্ষমতা নিজেদের হাতে তুলে নেয় মায়ানমার সেনা। পালটা ক্যু বা সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে পথে নামে দেশের আমজনতা। কোথাও তারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছে, তো কোথাও আবার শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছে। রাজধানী নাইপিদাও থেকে শুরু করে ইয়াঙ্গন পর্যন্ত প্রায় সমস্ত বড় শহরে রাস্তায় সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে সরব হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। এই আন্দোলনের কণ্ঠরোধ করতে শুরু থেকেই নির্বিবাদে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে জুন্টার বিরুদ্ধে। তবে সব রেকর্ড ভেঙে গিয়েছে গত শনিবার। ওইদিনের বিপুল মৃত্যুস্রোতে বিস্মিত গোটা বিশ্ব। সব মিলিয়ে গত দু’মাসে মায়ানমার সেনার হাতে পাঁচশোর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
এই নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে গোটা বিশ্ব। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন-সহ ১২টি দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। এদিকে সরাসরি মায়ানমার সেনার নিন্দা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (Joe Biden)। জানিয়েছেন, ”ভয়ানক ঘটনা। অত্যন্ত আপত্তিজনক। বিনা কারণে এত মানুষের প্রাণ যাচ্ছে।”
[আরও পড়ুন: ল্যাব নয়, পশু থেকেই ছড়িয়ে থাকতে পারে করোনা! WHO ও চিনের রিপোর্টের খসড়া ঘিরে বিতর্ক]
তাতেও অবশ্য হেলদোল নেই সেনার। গতকালও একই ভাবে গুলি চালানো হয়েছে গণতন্ত্রকামীদের বিরুদ্ধে। মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৪ জনের। পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে ওঠায় হাজার হাজার মানুষ মায়ানমার ছেড়ে থাইল্যান্ডে পালাতে শুরু করেছেন।