সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গোষ্ঠী সংঘর্ষে জর্জরিত মায়ানমারে শেষ হল ভোটদান। করোনা আবহেও রবিবার গণতন্ত্রের বৃহত্তম উৎসবে অংশ নিতে বেরিয়ে এসেছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। কিন্তু রোহিঙ্গাদের ভোটাধিকার না দেওয়ায় প্রশ্নের মুখে গোটা নির্বাচনী প্রক্রিয়া। এর ফলে রাখাইন প্রদেশে ফের হিংসার ঘটনা বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা।
[আরও পড়ুন: ‘কেবল ফ্লয়েডের নয়, অনেকেরই শ্বাসরোধ হয়েছিল’, বিডেনের জয়ে কেঁদেই ফেললেন কৃষ্ণাঙ্গ সঞ্চালক]
এদিন, সকল থেকেই মায়ানমারের সবচেয়ে বড় ইয়াঙ্গনের বিভিন্ন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোটারদের সার দিয়ে দাঁড়াতে দেখা যায়। করোনা আবহে সবার মুখেই মাস্ক ছিল। ভোটকর্মীদের পরনে পিপিই কিট। মহামারী আবহে বিরোধীরা নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার দাবি করলেও মানেনি সরকার। নির্দিষ্ট সময় মতেই শুরু হয় নির্বাচন। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে প্রায় পাঁচ দশকের সামরিক শাসনের শিকল ভেঙে মায়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্টা করেন সু কি। সেবছরের নির্বাচনে ‘জুন্টা’র বিরুদ্ধে জনরোষ ভোটবাক্সে সু কি’র হয়ে কার্যত সুনামি তৈরি করে। বিপুল জনমতে মসনদে বসেন তিনি। কিন্তু, তারপর পরিস্থিতি পালটেছে। রোহিঙ্গা গণহত্যা থেকে শুরু করে দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ উঠেছে শাসকদল ‘ন্যাশনাল লিগ অফ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি’র বিরুদ্ধে। আন্তর্জাতিক মঞ্চেও নোবেলজয়ী সু কি’র ছবি ধাক্কা খেয়েছে। যে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিল জনতা, আজ ‘গণতান্ত্রিক পর্দা’র আড়ালে বসে ছড়ি ঘোড়াচ্ছে সেই সেনাবাহিনীই। এহেন পরিস্থিতিতে রবিবার ভোট দেবে মানুষ।
মায়ানমারে প্রায় ৩ কোটি ৭০ লক্ষ নথিভুক্ত ভোটার রয়েছে। কিন্তু আজও রোহিঙ্গা মুসলিমদের ভোটাধিকার দেওয়া হয়নি। এর ফলে বার্মিজ পার্লামেন্টের দুই সদনের সদস্য বেঁচে নিতে চলা গোটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় গলদ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ‘Human Rights Watch’। এর ফলে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে রোহিঙ্গা মুসলিম অধ্যুষিত রাখাইন প্রদেশে। সেখানে জঙ্গি সংগঠন ‘আরকান আর্মি’র সঙ্গে টাটমাদাও বা সরকারি বাহিনীর লড়াই চলছে। রোহিঙ্গারা ভোট না দেওয়ায় ওই প্রদেশে সহজেই জয়ী হবে আং সান সু কি’র শাসকদল ‘ন্যাশনাল লিগ অফ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি’। ফলে বিশ্লেষকদের ধারণা, রোহিঙ্গাদের উপর আরও নির্যাতন বাড়বে।