সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: আর জি করের ঘটনায় যখন উত্তাল রাজ্য, তখনই নদিয়ার বগুলায় রেললাইন থেকে উদ্ধার অর্ধনগ্ন নাবালিকার ক্ষতবিক্ষত দেহ। রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু পরিবারের প্রশ্ন, তাহলে দেহ অর্ধনগ্ন কেন? মৃত্যুর পিছনে অন্য কোন রহস্য রয়েছে। ইতিমধ্যেই তদন্তে নেমে পড়েছে রাজ্য পুলিশও।
বৃহস্পতিবার সকালে বগুলা স্টেশন সংলগ্ন কুটিপাড়া রেলগেটের পাশে অজ্ঞাতপরিচয় ওই নাবালিকার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। পরে RPF এসে দেহটি উদ্ধার করে এবং রানাঘাট পুলিশ মর্গে পাঠায়। পরিবার সূত্রে খবর, ওই নাবালিকা বেনালির বাসিন্দা। মা-বাবা মৃত হওয়ায় মেয়েটি বগুলাতে দিদি বাড়িতে থাকতেন। মৃতার দিদি জানান, বুধবার বিকেলে বান্ধবীর বাড়ি যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরোয় ওই নাবালিকা। এর পর রাতে দিদিকে ফোন করে জানায়, রাত হয়ে যাওয়ার কারণে বান্ধবীর বাড়িতেই থাকবে সে। ভোরবেলা ফিরবে।
[আরও পড়ুন: গলায় গেরুয়া, মারমুখী মেজাজ! নবান্ন অভিযানে অশান্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার তরুণী]
বোন সকালে বাড়ি না ফেরায় উদ্বিগ্ন দিদি তাকে ফোন করেন। কিন্তু ফোন ধরে পুলিশ। মৃতার দিদিকে জানানো হয়, তাঁর বোনের ক্ষতবিক্ষত দেহ রেললাইন থেকে উদ্ধার হয়েছে। তড়িঘড়ি তিনি হাসপাতালে পুলিশ মর্গে ছুটে যান। মৃতার দিদির দাবি, মেয়েটি খুব আদুরে ছিল এবং মা মারা যাওয়ার পর মামার বাড়িতে চলে যায়। নানা সমস্যায় মাধ্যমিক দেওয়া দেওয়া হয়নি। পড়াশোনাও ছেড়ে দিয়েছিল। তবে বোন আত্মহত্যা করেছে, সেটা কোনোভাবেই মানতে নারাজ তিনি। মৃতার দিদির অভিযোগ, নাবালিকার মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে। হয়তো তাকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন:সুকান্ত দিলীপের সঙ্গে ২ ঘণ্টার বৈঠক রাজ্যপালের, তার পরই তড়িঘড়ি দিল্লি যাচ্ছেন বোস]
তাঁর বক্তব্য, মৃত্যুর সময় বোন যে পোশাক পরেছিল সেই পোশাক সে আগে কোনওদিন পরেনি। এই পোশাক সে কোথায় পেল? সেটা নিয়েও তাদের মনে প্রশ্ন রয়েছে। নাবালিকা আদৌ বান্ধবীর বাড়ি গিয়েছিল কিনা তাও তাদের সঠিক জানা নেই, বলেও জানিয়েছেন মৃতার দিদি। তবে তার বোনের প্রেমগঠিত সম্পর্ক রয়েছে বলেও মনে করছেন তিনি। যদিও বোন কিছু বাড়িতে না জানানোয় সেসব নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তিনি দিতে পারেননি।
অন্যদিকে, এই ঘটনার পরই রেলের গার্ডের একটি বক্তব্য প্রকাশ্যে আসে। সেখানে রেলের গার্ড জানান তিনি যখন ট্রেন নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন ওই মেয়েটি ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ লাইনের উপর ঝাঁপ দেয় এবং তার ওপর দিয়ে ট্রেন চলে যায়। পরবর্তীতে তিনি রেলের গার্ডকেও এই বিষয়টি জানান।