বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: পেশায় তিনি একজন বিড়ি ব্যবসায়ী। কিন্তু তাতে কী? স্বপ্ন পূরণ করতে লড়াই চালিয়েছেন প্রতিদিন। অবশেষে যার ফল মিলল। এক টাকা ও দু টাকার কয়েন জমিয়ে পৌনে ২ লক্ষ টাকা দামের মোটরবাইক কিনলেন যুবক। ঘটনার সাক্ষী নদিয়া (Nadia)।
নদিয়ার ভীমপুর থানার কুলগাছির বাসিন্দা সুব্রত সরকার। উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া বিড়ির ব্যবসা করেন তিনি। ফলে সংসার সামলানোই ছিল কঠিন। তা সত্ত্বেও নিজের স্বপ্নপূরণ করতে বরাবর টাকা জমানোর চেষ্টা করেছেন। যখন যেমন পেরেছেন, এক টাকা, দু’টাকা করে জমিয়েছেন বাইক কেনার স্বপ্ন নিয়ে। প্রায় পাঁচবছর টাকা জমিয়ে গত মঙ্গলবার ছেলে শেখর সরকারকে নিয়ে ভীমপুর থানার আসাননগর রোডের রামকৃষ্ণপল্লির একটি বাইক শোরুমে যান সুব্রতবাবু। সঙ্গে ছিল বস্তাবন্দি কয়েন। শোরুমের মালিক পরিতোষ নস্করকে নিজের শখের কথা খুলে বলেন সুব্রত। প্রথমে আপত্তি করলেও শেষমেশ অবশ্য রাজি হয়ে যান মালিক।
[আরও পড়ুন: ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ঘোড়ামারা দ্বীপে, এবার ‘পঞ্চায়েতের পাঠশালা’তেই শিক্ষা স্কুলপড়ুয়াদের]
এরপরই সুব্রতবাবু পছন্দের বাইক বেছে নিতেই বস্তা খুলে কয়েন গোনা শুরু করেন শোরুমের কর্মীরা। কার্যত হিমশিম অবস্থা হয় কর্মীদের। শেষপর্যন্ত অবশ্য এক লক্ষ ৮২ হাজার ৮৬০ টাকার বিনিময়ে বিল-সহ স্বপ্নের মোটরবাইক কিনে নিয়ে বাড়ি যান সুব্রত সরকার। স্বাভাবিকভাবেই বেজায় খুশি ওই বিড়ি ব্যবসায়ী। সুব্রতবাবু বলেন, “আমার দামী গাড়ি কেনার শখ ছিল। কিন্তু আমি যে ব্যবসা করি, তা দিয়ে আর যাই হোক দামী গাড়ি কেনা সম্ভব নয়। প্রায় পাঁচ বছর ধরে কয়েন জমাচ্ছিলাম। ভেবেছিলাম, একদিন ঠিক কাজে আসবে এবং সেই কয়েন দিয়ে আমি আমার শখ পূরণ করতে পারব। অবশেষে দামী মোটরবাইক কিনে নিজের শখ পূরণ করতে পাড়ায় ভীষণ ভাল লাগছে। আমি এবং আমার ছেলে দু’জনেই বাইক চালাচ্ছি।”
ছেলে শেখর জানিয়েছে, “বাবা এবং আমি দুজনেই মোটরবাইক চালাচ্ছি। খুব ভাল লাগছে। যদিও নতুন মোটরবাইক কিনে মোটরবাইকে বসে ছবি তুলতে কিছুতেই রাজি হননি বাবা। তাই মোটরবাইকের ওপরে বসা অবস্থায় বাবার ছবি তোলা হয়নি।”