সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: গলার নলি কেটে স্ত্রীকে খুন। সেই অপরাধে দোষী সাব্যস্ত স্বামী। বৃহস্পতিবার তাকে যাবজ্জীবন সাজা ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন নবদ্বীপ আদালতের অতিরিক্ত দায়রা এবং জেলা বিচারক দেবব্রত কুণ্ডু। দোষীর তরফে কোনও আইনজীবী ছিলেন না। তবে লিগাল এইডের তরফে ষষ্ঠীভূষণ পালকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সাজাপ্রাপ্ত উচ্চতর আদালতে যেতে পারেন।
বেশ কয়েক বছর আগে নদিয়ার চাকদহের শিমুরালির বাসিন্দা জীবন সরকারের সঙ্গে কামনা সরকারের বিয়ে হয়। তাঁদের পুত্রসন্তানও ছিল। আচমকাই খুন হন কামনা। গত ২০১৬ সালের ৭ অক্টোবর নবদ্বীপের স্বরূপগঞ্জের বাসিন্দা তপন হালদার জীবনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। নিহত গৃহবধূর দাদা দাবি করেন, ওইদিন দুপুর দেড়টা নাগাদ তাঁর বোন স্বরূপগঞ্জ পশ্চিমপাড়ায় বাড়ির সামনের রাস্তার ধারে কলে ছেলেকে স্নান করাচ্ছিলেন। হঠাৎ জীবন সরকার সেখানে উপস্থিত হয়। চুলের মুঠি ধরে কল্যাণীকে কলতলা থেকে টেনে নিয়ে যায়। নাবালক ছেলের সামনেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে খুন করে পালিয়ে যায়। ছেলের চিৎকারে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন। রক্তাক্ত অবস্থায় বধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
[আরও পড়ুন: ‘সিরিয়াল ছেড়েছি তৃণমূলের জন্য’, ভোটের মুখে বড় কথা লাভলির!]
এই ঘটনার পর থেকে পালিয়ে যান জীবন। তদন্তে নেমে ২০১৬ সালের ১০ অক্টোবর তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জেল হেফাজতে থাকাকালীন তার বিচারপর্ব সম্পূর্ণ হয়। তাকে যাবজ্জীবন সাজা ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন নবদ্বীপ আদালতের অতিরিক্ত দায়রা এবং জেলা বিচারক দেবব্রত কুণ্ডু। নবদ্বীপ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি সনৎ কুমার রায় বলেন, “অভিযুক্তের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। একজন বাবা নিজের নাবালক সন্তানের চোখের সামনে তার মাকে খুন করেছে। এমন একটি মারাত্মক অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়েছেন বিচারক।”
অন্যদিকে, অভিযুক্তের হয়ে কোনও আইনজীবী নিয়োগ না করায় লিগাল এইডের তরফে ষষ্ঠীভূষণ পালকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সাজা ঘোষণায় তিনি জানান, এই মামলার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী ছিল মৃতের নাবালক পুত্র। এই মামলায় ১৮ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন আদালতে। তবে সকলেই ছেলের বয়ানের উপর ভিত্তি করে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। ষষ্ঠীভূষণ পাল আরও জানান, এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবে সাজাপ্রাপ্ত।