অর্ণব আইচ: আইপিএলের (IPL) জাল টিকিট তৈরি করে চড়া দামে বিক্রি। এই জালিয়াতির চক্রের মাথা বিক্রম সাহাকে নদিয়ার তাহেরপুর থেকে গ্রেপ্তার করলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। এর আগে এই চক্রের আরও ৬ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ওই ধৃতদের মধ্যে রয়েছে মা ও ছেলেও। তাহেরপুরের বাসিন্দাদের দাবি, মূল অভিযুক্ত বিক্রম সাহা ওই এলাকার তৃণমূল নেতা বলেই পরিচিত। কীভাবে তিনি এই চক্রটি চালাতেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে গোয়েন্দা পুলিশের তদন্ত।
পুলিশ জানিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার বাসিন্দা এক যুবকের অভিযোগ, তিনি ও তাঁর বন্ধুরা আইপিএল ম্যাচের পাঁচটি টিকিট ময়দান এলাকা থেকেই কেনেন। ইডেনে আইপিএল ম্যাচের আগে ওই টিকিট নিয়ে তাঁরা মাঠে প্রবেশের চেষ্টা করেন। কিন্তু বার কোড না মেলায় কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিকদের সন্দেহ হয়। যদিও টিকিটগুলি দেখতে একেবারে আসলের মতোই। টিকিটগুলি পুলিশ উদ্ধার করে। এই ব্যাপারে ময়দান থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ টিকিট পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয় যে, টিকিটগুলি জাল। যাঁরা জাল টিকিট নিয়ে ইডেনে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন, তাঁদের জেরা করে জানা যায়, তাঁরা কাদের কাছ থেকে টিকিটগুলি কিনেছেন। সেই সূত্র ধরে তদন্ত চালিয়ে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের গুন্ডাদমন শাখার আধিকারিকরা নারকেলডাঙার মহিলা বেবি বেগম ও তাঁর ছেলে মহম্মদ ওয়াসিমকে গ্রেপ্তার করেন।
[আরও পড়ুন: জি-২০ সম্মেলনে জেহাদের ছায়া, কাশ্মীরে খতম ২ লস্কর জঙ্গি]
ওই দু’জনই টিকিটগুলি ময়দান এলাকায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করছিল। তাদের জেরা করে বড়তলার ইমাম বক্স লেন থেকে দিলীপ রায়, এন্টালি থেকে একলাখ আহমেদ, নিউ মার্কেট থেকে পাপ্পু মাহাতোকে গ্রেপ্তার করেন গোয়েন্দারা। তাদের মধ্যে মূল এজেন্ট পাপ্পু স্বীকার করে যে, চক্রের মাথা তাহেরপুরের নেতা বিক্রম সাহা। ওই নেতাই জাল টিকিট তৈরি করিয়ে সেগুলি আসল বলে বিক্রি করার জন্য তুলে দিয়েছেন অন্যদের হাতে। বিক্রির টার্গেট ছিল কলকাতা। এ ছাড়াও নদিয়া ছাড়াও অন্যান্য জেলায়ও বিক্রি হয় ওই জাল টিকিট। তখন টিকিটের হাহাকার চলছে। তাই সামনে টিকিট পেয়ে সেটি আসল না কি নকল, তা কেউ খতিয়ে দেখে না। সেই সুযোগ নিয়েই চলে টিকিট বিক্রি।
বুধবার ভোররাতে তাহেরপুরে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ বিক্রম সাহাকে গ্রেপ্তার করে। জেরার মুখে বিক্রম স্বীকার করেন যে, তিনি চাকদহের বাসিন্দা অরিন্দম বিশ্বাসকে জাল টিকিট তৈরির ভার দেন। অরিন্দম কম্পিউটারের মাধ্যমে সেগুলি তৈরি করে। রানাঘাট থেকে অরিন্দমকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পরের ম্যাচগুলিতে যাতে কেউ জাল টিকিট নিয়ে প্রবেশ না করে, সেদিকে নজর রাখা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।