রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: পেটে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তরুণী। আর তাঁকে দেখভাল করতে হাসপাতালে রাত কাটান বাবা। বাড়ি ফিরে চক্ষু চড়কগাছ। ঘরে পড়ে মহিলার দেহ। লণ্ডভণ্ড গোটা ঘর। বাবা-মেয়ে দুজনেই দাবি করেন, বাধা পেয়ে ডাকাতদল ওই মহিলাকে খুন করেছে। তবে পুলিশের খটকা লাগে। তদন্তে উঠে আসে অন্য তথ্য। পুলিশের দাবি, পরকীয়ায় আসক্ত মাকে খুন করে ডাকাতির গল্প ফাঁদে বাবা ও মেয়ে।
নদিয়ার পলাশিপাড়ার ঈশ্বরচন্দ্রপুর মাঠপাড়া এলাকার বাসিন্দা চামেলি বিশ্বাস। গত বুধবার ওই মহিলার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। বছর তেইশ আগে শ্যামল বিশ্বাসের সঙ্গে বিয়ে হয়। তাঁদের একমাত্র সন্তান শাঁওলি। শ্যামল ভিনরাজ্যে কাজ করতেন। স্থানীয়দের দাবি, সেই সুযোগে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন চামেলি। গত ৩ আগস্ট পরকীয়া নিয়ে মা ও মেয়ের ঝামেলা হয়। শাঁওলি তাঁর বাবাকে ফোন করে গোটা ঘটনাটি জানান। জানতে পেরে সোমবার বাড়ি ফিরেন শ্যামল। পুলিশ সূত্রে খবর, পরকীয়া নিয়ে শ্যামল ও চামেলির মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। অশান্তি ক্রমে চরম আকার নেয়। ঝগড়াঝাটি মাঝে চামেলিকে আক্রমণ করে বাবা ও মেয়ে। বধূর মাথায় ভারী ধাতব বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়। ঘটনাস্থলে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন চামেলি। কিছুক্ষণের মধ্যে মৃত্যু হয় তাঁর।
[আরও পড়ুন: তরুণী চিকিৎসকের যৌন হেনস্তা-খুনের জের, অপসারিত আর জি কর হাসপাতালের সুপার]
খুনের ঘটনা ধামাচাপা দিতে এর পর নয়া পরিকল্পনা ফাঁদে বাবা ও মা। নিজেদের অপরাধ ঢাকতে ডাকাতির গল্প সাজায় দুজনে। আলমারি লণ্ডভণ্ড করে ফেলে তারা। গোটা ঘরে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়। প্রতিবেশীদের মেয়ের অসুস্থতার কথা জানান। এর পর শাঁওলিকে নিয়ে সোজা তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে যায় শ্যামল। মেয়েকে এক রাতের জন্য হাসপাতালে ভর্তিও করে। বুধবার সকালে বাড়ি ফেরে বাবা ও মেয়ে। ঘরে ঢুকে চামেলির দেহ দেখে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। তদন্তে নেমে পুলিশ বাবা ও মেয়েকে জেরা করে এই ঘটনা সংক্রান্ত হাড়হিম করা তথ্য পায় পুলিশ।