শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: পুলিশকে অন্ধকারে রেখে চোপড়ার নির্যাতিত যুগলের সঙ্গে দেখা কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশনের। বৃহস্পতিবার নির্যাতিতদের বাড়িতে আসে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল। নির্যাতিতদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। ওই তরুণ এবং তরুণীর শারীরিক অবস্থায় খোঁজ নেন। পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেন তাঁরা। নির্যাতিত যুগলের বাড়ি থেকে বেরিয়ে অবশ্য সংবাদমাধ্যমের সামনে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি কমিশনের সদস্যরা। ইসলামপুরের পুলিশ সুপার জবি থমাস বলেন, "শুনেছি কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা চোপড়ায় এসেছেন। কিন্তু কমিশনের তরফে আমাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেননি।"
এর আগে গত মঙ্গলবার, রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস ওই নির্যাতিত যুগলের সঙ্গে দেখা করতে চান। শিলিগুড়ির সার্কিট হাউসে তাঁদের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। কিন্তু সাক্ষাতে রাজি হননি তাঁরা। যদিও কী কারণে দেখা করতে চাননি তাঁরা, তা স্পষ্ট নয়। নির্যাতিত যুগলের সিদ্ধান্তে রাজ্যপালের চোপড়া সফর বাতিল হয়ে যায়। যে বা যারা ভিডিও ভাইরাল করল, তাদের শাস্তির দাবি জানান নির্যাতিত যুগল এবং তাঁদের পরিজনেরা।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জুন, চোপড়ার জেসিবির ‘দাদাগিরি’র ভিডিও ভাইরাল হয়। দেখা গিয়েছে, মাটিতে ফেলে এক যুবক ও যুবতীকে লাগাতার লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করছেন জেসিবি। চারিদিকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছেন মহিলা-সহ অসংখ্য মানুষজন। অথচ কেউ রক্ষা করার জন্য এগিয়ে যেতে দেখা যায়নি। থামাননি কেউ। না। বরং যুগলকে পাশবিকভাবে মারধরের মর্মান্তিক দৃশ্য রীতিমতো তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছেন তাঁরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিলেন ওই তরুণ-তরুণী। তার পর গ্রামে সালিশি সভার আয়োজন করা হয়। যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল।
এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ তদন্তে নেমে গত রবিবার জেসিবিকে গ্রেপ্তার করে। চোপড়া কাণ্ডের ভিডিও ফুটেজ দেখে আমিরুল ইসলাম ওরফে বধুয়া, আবদুল রউফ ও তাহিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতরা জেসিবি 'ঘনিষ্ঠ' বলেই জানা গিয়েছে।