সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেনের (Ukraine) খারকভ শহরে রুশ হানায় প্রাণ হারিয়েছেন মেডিক্যালের ভারতীয় ছাত্র নবীন শেখারাপ্পা জ্ঞানাগোদার (Naveen Shekharappa Gyanagoudar)। গতকাল ছেলের মৃত্যুর খবর কর্ণাটকের হাবেরি জেলার চালাগেরি গ্রামে পৌঁছনোর পর থেকেই শোকস্তব্ধ পরিবার। বুধবারও পুত্রশোকে নিমজ্জিত নবীনের বাবা। কিন্তু এদিন তাঁর মন্তব্যে প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। কী বললেন তিনি?
অবসরপ্রাপ্ত মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়র শেখারাপ্পা অভিযোগ করলেন, ভাল ছাত্র হওয়া সত্বেও, এমবিবিএসের (MBBS) প্রবেশিকা পরীক্ষায় ভাল নম্বর পেলেও দেশে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পাননি নবীন। শেখারাপ্পার দাবি, প্রবেশিকায় (PEUC) ৯৬ শতাংশ নম্বর পেয়েছিলেন ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত নবীন। তারপরেও দেশে পড়ার সুযোগ না পাওয়ার কারণ বর্ণভিত্তিক সংরক্ষণের গেরো। কলেজগুলিতে আসন কম থাকা। তাঁর আরও অভিযোগ, এদেশে বেসরকারি স্কুলে মেডিক্যাল পড়তে হলে কোটি টাকা ডোনেশন দিতে হয়।
[আরও পড়ুন: রুশ গোলায় কিয়েভ যেন মৃতুপুরী, যুদ্ধের মাঝে শরণার্থীদের আগলে রাখছেন ভারতীয় রেস্তরাঁর মালিক]
সন্তানহারা বাবা শেখারাপ্পা বলেন, “পিইউসি-তে ৯৭ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল নবীন। তা সত্ত্বেও রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজে সুযোগ পায়নি সে।” বলেন, “এখানে মেডিক্যাল আসন (বেসরকারি) পেতে কোটি টাকা খরচ করতে হয়। সেখানে কম টাকায় বিদেশে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ মেলে।” সেই কারণেই ইউক্রেনে যান নবীন।
এদিন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে রীতিমতো প্রশ্নের মুখে ফেলে দেন শেখারাপ্পা। বলেন, “ভারতে এমবিবিএস পড়ার জন্য ডোনেশন দিতে হয়। এই কারণেই মেধাবী শিক্ষার্থীরা বিদেশে চলে যাচ্ছেন। এখানে আসন বণ্টন করা হয় মেধার ভিত্তিতে নয় বরং বর্ণভিত্তিক সংরক্ষণের ভিত্তিতে।”
[আরও পড়ুন: দেশ বাঁচাতে এবার রুশ ট্যাঙ্ক ‘চুরি’ করলেন ইউক্রেনের চাষি, ভিডিও ভাইরাল]
প্রসঙ্গত, গতকাল বিদেশমন্ত্রক নবীনের মৃত্যুর খবর জানায়। নবীনের বাবাকে ফোন করে সমবেদনা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। এদিকে নবীনের মৃত্যুর পর ইউক্রেনে আটকে পড়া পড়ুয়াদের কটাক্ষ করে বিতর্কে জড়িয়েছেন কেন্দ্রের সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী (Pralhad Joshi)। প্রহ্লাদের মন্তব্য, “যাঁরা বিদেশে পড়তে যান, তাঁদের ৯০ শতাংশ এ দেশে ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন।” যদিও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে (Russia-Ukraine War) সন্তানহারা পিতার মন্তব্যে সম্পূর্ণ উলটো চিত্রই উঠে এল।