তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: ছাত্রীকে যৌন হেনস্তার ঘটনা নিয়ে দিনভর দফায়-দফায় বিক্ষোভ দেখাল উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের পড়ুয়ারা। শেষপর্যন্ত গবেষক ও ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনের চাপে পড়ে অভিযুক্ত বিভাগীয় প্রধান জ্ঞানবিকাশ ভাণ্ডারিকে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সাসপেন্ড করল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ওই ছাত্রী জুনিয়র রিসার্চ ফেলো হিসাবে অভিযুক্ত অধ্যাপকের অধীনে গবেষণা করতেন। গবেষণার সুপারভাইজার হওয়ার সুযোগে ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন ওই অধ্যাপক তাঁকে যৌন নিগ্রহ করেছেন বলে অভিযোগ ওই ছাত্রীর। মঙ্গলবার ঘটনার লিখিত অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা হওয়ার পরই শোরগোল পড়ে যায়। উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সামনে বুধবার সকাল থেকেই বিভাগীয় প্রধান জ্ঞানবিকাশ ভাণ্ডারির শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখায় পড়ুয়ারা। এরপর মিছিল করে গিয়ে প্রশাসনিক ভবনে রেজিস্ট্রারের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ দেখান গবেষক ও ছাত্রছাত্রীরা। উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের পড়ুয়ারা ক্লাস বয়কট করে প্রতিবাদে শামিল হন। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে তড়িঘড়ি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়।
[আরও পড়ুন: নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন বৃদ্ধের! প্রতিবাদে পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে ভাঙচুর, উত্তপ্ত মগরাহাট]
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বপনকুমার রক্ষিত সিদ্ধান্ত মোতাবেক অভিযুক্ত শিক্ষককে বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে সরানো হয়েছে। তাঁর জায়গায় অধ্যাপক সুভাষচন্দ্র রায়কে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনিও ওই বিভাগের অধ্যাপক। অভিযুক্তকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে, ছাত্রীকে বলা হয়েছে, নিজের পছন্দ মতো থিসিস গাইড বেছে নিতে।
যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে খুশি নন আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীরা। তাঁরা চাইছেন, অভিযুক্তর ডক্টরেট ডিগ্রি ছিনিয়ে নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। যতক্ষণ তা না করা হবে ততক্ষণ চলবে। এমনকী, দ্রুত এই নিয়ে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে বৃহস্পতিবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত বিভাগ একত্রে বিক্ষোভে শামিল হবে। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বপনকুমার রক্ষিত বলেন, “অভ্যন্তরীণ তদন্তে যদি অভিযুক্ত দোষী প্রমাণিত হন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”