নব্যেন্দু হাজরা: ইতিহাসে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে (Netaji Subhas Chandra Bose) কম গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁকে ঘিরে থাকা সমস্ত তথ্য প্রকাশ্যে আনা উচিত। এবার এই দাবি তুললেন বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তাঁর কথায়, “যাবতীয় সত্য প্রকাশ্যে আসুক। নেতাজিকে নিয়ে অর্ধসত্য জানার দিন শেষ।” নেতাজিকে নিয়ে ইতিহাস নতুন করে লেখার দাবিও শোনা গেল তাঁর গলায়। এদিনের অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তা দেন নেতাজিকন্যা অনিতা বসু। তিনি এদিন আরও একবার মনে করিয়ে দেন, দেশনায়ক নেতাজি হিন্দু বাঙালি হলেও আদ্যোপ্রান্ত অসাম্প্রদায়িক ছিলেন। হিন্দু-মুসলিম সকলকে নিয়ে কাজ করতেন তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ে দাঁড়িয়ে নেতাজিকন্যার এহেন বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। অভিযোগ, কেন্দ্রে থাকা বিজেপি সরকার বারবার নেতাজি আবেগকে নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগাতে চেয়েছেন। অথচ সাম্প্রদায়িকতার রং ছেড়ে বেরতে পারেননি তারা। তাই এদিন ঘুরিয়ে মোদি সরকারকেই বার্তা দিয়ে রাখলেন নেতাজিকন্যা।
[আরও পড়ুন: স্কুলে হাম-রুবেলার টিকা নেওয়ার পর অসুস্থতার অভিযোগ, শিলিগুড়ির হাসপাতালে মৃত্যু ছাত্রীর]
সোমবার বণিকসভা আয়োজিত নেতাজি সংক্রান্ত আলোচনাসভায় অংশ নিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তাঁর কথায়, দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে আজাদ হিন্দ ফৌজের অবদান প্রচুর। নেতাজি ছিলেন বলেই স্বাধীনতা এসেছে। কিন্তু ইতিহাসে সেই অবদানের কথা যথাযথ মর্যাদা পায়নি। নেতাজির অন্তর্ধানও রহস্য হয়ে থেকে গিয়েছে। রাজ্যপালের আক্ষেপ, “ইতিহাসে নেতাজি কম গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ইতিহাস মানেই সব সত্যি নয়। নেতাজি সংক্রান্ত ইতিহাস বদল হওয়া দরকার।” সিভি আনন্দ বোসের আরও সংযোজন, “নেতাজি সংক্রান্ত যা যা লুকিয়ে আছে, তা প্রকাশ্যে আসুক। অর্ধসত্য জানার দিন শেষ। সত্যিটা উঠে আসুক এবার।”
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, কেন্দ্রে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নেতাজি আবেগে ধুয়ো দেওয়ার চেষ্টা করেছে তাঁরা। সুভাষচন্দ্র বসুর বহু গোপন ফাইল প্রকাশ্যে এনেছে তাঁরা। তবে নেতাজি গবেষকরা অভিযোগ করেছেন, অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ ফাইলই নেই এই তালিকায়। ফলে প্রকৃত সত্য প্রকাশ্যে আনার দাবি উঠেছে বারবার। এবার কেন্দ্রের বাছাই করা বাংলার রাজ্যপালও নেতাজি সংক্রান্ত সমস্ত সত্য সামনে আনার দাবি জানালেন।
[আরও পড়ুন: ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিতে অন্যরূপে ‘দিদির দূত’ মদন, ঢেঁকিতে ভাঙলেন চাল, খেলেন খিচুড়ি]
তাৎপর্য়পূর্ণ বার্তা দেন নেতাজিকন্যাও। ভিডিও বার্তায় অনিতাদেবী বলেন, “নেতাজি হিন্দু বাঙালি ছিলেন ঠিকই কিন্তু তিনি সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলতেন। সাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাসী ছিলেন না।” অর্থাৎ এদিন নেতাজিকন্যার গলাতেও অসাম্প্রদায়িকতার সুর শোনা গেল। এদিনের অনুষ্ঠানে ভিডিওবার্তা দেন নেতাজির প্রপৌত্র চন্দ্র বসুও। তাঁর কথায়, “কেন্দ্র ও রাজ্য়ের কাছে অনুরোধ নেতাজি সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য লিখিতভাবে প্রকাশ্যে আনা হোক।”