অর্ণব দাস, বারাকপুর: রাতে খেতে বসেও মোবাইল দেখছিল মেয়ে। এনিয়ে বকা দিয়েছিলেন মা। অভিমান করে না খেয়েই ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়েছিল বছর পনেরোর কিশোরী। পরেরদিন সকালে আবাসনের নিচ থেকে উদ্ধার হল সেই ছাত্রীর দেহ। প্রাথমিক অনুমান, আবাসনের ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে সে। সোমবার সকালে নিউ বারাকপুর থানার এসএন ব্যানার্জি রোডের মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোকের ছায়া এলাকায়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রের জানা গিয়েছে, নিউ বারাকপুরের ওই আবাসনের বাসিন্দা নবম শ্রেণির ছাত্রী। তার স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষার শুরু হবে আর কয়েকদিন পর। রবিবার রাতে সে খেতে বসেও মোবাইল ফোন দেখা নিয়ে মায়ের কাছে বকুনি খেতে হয়েছিল ছাত্রীকে। রাতের খাবার না খেয়ে সে নিজের ঘরে চলে শুতে চলে গিয়েছিল। অন্যান্য দিনের মত সোমবার সকালেও তাঁর বাবা কাজে চলে গিয়েছিলেন। দাদা গিয়েছিল পড়তে। কিন্তু সকালেও মনে চাপা অভিমান ছিল কিশোরীর। প্রতিবেশীদের অনুমান, মা যখন সংসারের কাছে ব্যস্ত, সেই সুযোগে কিশোরী পাঁচতলা ফ্ল্যাটের ছাদে উঠে ঝাঁপ দেয়।
প্রতিবেশী সুতপা হালদার বলেন, "ওরা ফ্ল্যাট কিনে এলাকায় কয়েক বছর হল এসেছে। মেয়েকে মা স্কুলে নিয়ে যেত দেখতাম। এদিন সকালে ভারী কিছু পড়ার মত বিকট আওয়াজ পেয়ে আমার স্বামী বেরিয়ে গিয়ে এমন একটা দৃশ্য দেখতে পান।" পথচলতি মানুষ ও স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় কিশোরীকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে জড়ো হয়ে যান। শোরগোল পড়ে যায় সেখানে। সেই চিৎকার-চেঁচামেচি শুনেই কিশোরীর মা ঘর থেকে বেরিয়ে এসে মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন। তড়িঘড়ি ছাত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় বারাসত সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে নিউ বারাকপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত শুরু করেছে। বোনের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে যান তাঁর দাদা। তিনি জানান, ''পেটে ব্যথার কথা জানিয়ে বোন এদিন স্কুলে যায়নি। রাতে এমন কিছু হয়নি, তাই এত বড় পদক্ষেপ নিয়ে নেবে ভাবতেই পারছি না।''