সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেখতে দেখতে দেড় বছর হয়ে গিয়েছে। আজও করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) উৎস সম্পর্কে ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। এর মধ্যেই এবার বাদুড়দের (Bat) শরীরে মারণ ভাইরাসের নয়া ব্যাচের সন্ধান পেলেন চিনের (China) বিজ্ঞানীরা। তাদের মধ্যে অন্যতম ‘রাইনোলোফাস পুসিলাস’ ভাইরাসের সঙ্গে কোভিড-১৯ ভাইরাসের আশ্চর্য মিল।
উওহান প্রদেশেরই ছোট অঞ্চলের মধ্যে এত রকমের ভাইরাসের সন্ধান থেকে স্পষ্ট, বাদুড়দের মধ্যে কত রকমের করোনা ভাইরাস থাকতে পারে। এবং তা কত দ্রুত মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। কেবল মানুষ নয়, শুয়োর, কুকুর, মুরগি, বিড়াল, গবাদি পশুদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে তারা।
২০১৯ সালের শেষের দিক থেকে সার্স-কোভ-২ (SARS-CoV-2) নামের নোভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল উওহান থেকেই। তারপর তা থেকে কীভাবে বিশ্বব্যাপী অতিমারীর জন্ম হয়েছিল তা কারও অজানা নয়। এবার নতুন গবেষণা থেকে গবেষকরা বুঝতে পারছেন, জিনগত ভাবে নোভেল করোনা ভাইরাসের সঙ্গে মিল আছে, এমন আরও ভাইরাস রয়েছে।
[আরও পড়ুন: কেন্দ্রের আপ্রাণ চেষ্টাতেই বাগে এসেছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ, কুয়েতে মন্তব্য জয়শংকরের]
এই নমুনা অবশ্য সম্প্রতি সংগৃহীত নয়। ২০১৯ সালের মে থেকে ২০২০ সালের নভেম্বর পর্যন্ত বাদুড়দের শরীর থেকে এগুলি সংগ্রহ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে বাদুড়ের মুখ থেকে ২৮৩টি নমুনা, মুখের লালারস থেকে ১০৯টি নমুনা ও প্রস্রাব থেকে ১৯টি নমুনা সংগ্রহ করে তা খতিয়ে দেখা হয়েছে।
গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ‘সেল’ নামের জার্নালে। সানডং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, মোট ২৪ রকমের নোভেল করোনা ভাইরাসের জিনের সন্ধান মিলেছে। তার মধ্যে চারটির সঙ্গে সার্স-কোভ-২-এর অনেকটাই মিল। এর মধ্যে একটি বিশেষ জিনের সঙ্গে সার্স-কোভ-২-এর জিনের গঠন প্রায় পুরোটাই মিলে যাচ্ছে।
[আরও পড়ুন: ‘পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক চায় ভারত’, রাষ্ট্রসংঘে বার্তা নয়াদিল্লির]
স্বাভাবিক ভাবেই এমন গবেষণায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে গবেষকদের মধ্যে। ওই গবেষণাপত্রে আরও জানানো হয়েছে, ২০২০ সালে থাইল্যান্ডেও এই ধরনের ভাইরাসের সন্ধান মিলেছিল। এর থেকে পরিষ্কার হয়ে যায় সার্স-কোভ-২ জাতীয় ভাইরাস বাদুড়দের মধ্যে দিয়ে ছড়িয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে কোনও কোনও অঞ্চলে সংক্রমণের মাত্রা অত্যন্ত বেশি হতে পারে।
এবার গবেষকরা মন দিয়েছেন, সার্স-কোভ-২-এর আসল উৎস খুঁজে বের করতে। তবে তাঁদের মতে, সম্ভবত সেই ভাইরাস কোনও পশুর মাধ্যমেই ছড়িয়ে ছিল। প্রসঙ্গত, ২০০২-২০০৪ সালে ত্রাস সঞ্চার করা সার্স ভাইরাসের উৎস ছিল ‘সিভেট ক্যাট’ নামে এক বিশেষ প্রজাতির বিড়াল।