shono
Advertisement

Breaking News

হিংস্র ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে শান্তি ও ভালবাসার গল্প সংস্তবের ‘উড়ন্ত তারাদের ছায়া’নাটক

বাস্তব ও কল্পনার মিশ্রণে তৈরি সুন্দর দৃশ্যগুলি।
Posted: 04:59 PM Apr 05, 2023Updated: 09:14 PM Apr 06, 2023

নির্মল ধর: সত্যি বলতে এই মুহূর্তের বাংলা প্রসেনিয়াম মঞ্চে আলো গান এবং মঞ্চকে নাটকের প্রয়োজনে তো বটেই, পাশাপাশি দর্শককে অভিভূত করে রাখার জাদুকর দেবাশিস রায়। তাঁর গত তিন-চারটি প্রযোজনা অন্তত সেটাই প্রমাণ করেছে। এবং আবারও করল ক’দিন আগে অ্যাকাডেমি মঞ্চে সংস্তব দলের হয়ে ‘উড়ন্ত তারাদের ছায়া’ (Uronto Tarader Chaya) নাটকটি।

Advertisement

শুধু দর্শককে চমক দেখানো নয়, এই নাটক মুঘল বাদশা মুহাম্মদ শাহ এবং পারস্য থেকে আসা তথাকথিত লুটেরা নাদির শাহকে এক কল্পিত ঘটানায় মুখোমুখি করে। নির্দেশক দু’জনার জীবনদর্শনের বৈপরীত্য যেমন দেখিয়েছেন, তেমনই নাদির শাহর মানসিক পরিবর্তনের একটা অলীক স্বপ্নও উপস্থিত করেছেন। দেবাশিস এই নাটকের মূল কারিগর। রচনা, মঞ্চ ও আলোর পরিকল্পনা এবং সংগীত-আবহ সৃজনের সব দায়িত্ব তাঁরই। এই নাটক বাস্তব ও কল্পনার এক মিশ্রণ।

নাদির শাহ যখন পারস্য থেকে কাবুল, লাহোরে হয়ে দিল্লি পৌঁছে যান ধন-সম্পদ লুটের উদ্দেশ্যে, মুহাম্মদ শাহ বলেন, “তোমাকে আমি ওগুলো উপহার দিলাম। ভারতের এই মাটি আমাকে কবিতা, গান, বিশ্বাস, ভালবাসা শিখিয়েছে, যুদ্ধ নয়।” দেবাশিসের কল্পনার কলম দেখিয়েছে পারস্যে ফিরে গিয়ে নিজের ছেলের হাতে খুন হবার সময় তাঁর চেতনায় যেন ফিরে ফিরে আসছে। মুহাম্মদ শাহের মুখে শোনা সুফি গানের লাইন “আল্লাহ হে আল্লাহ…প্যায়ার মে জিনা শিখো…”। মঞ্চে তখন দু’জনেই দাঁড়িয়ে। মুহাম্মদ “মৃত্যু কী” প্রশ্ন করলে নাদির উত্তর দেয় -“ঘেন্নার মতো উজ্জ্বল”। আর “জিন্দেগি কী” জানতে চাইলে নাদিরের উত্তর “ভালবাসার মতো করুণ”! মুহাম্মদ শাহই তাঁকে বলেছেন “অন্যের ধর্মকেই রক্ষা করাই শাসকের কর্তব্য”। তিনি যুদ্ধকে ভয় পান, গান গাইতে বেশি ভালবাসেন।

[আরও পড়ুন: ‘War 2’-এর নয়া চমক, এবার হৃতিকের সঙ্গে দ্বৈরথে দক্ষিণী সুপারস্টার এনটিআর জুনিয়র!]

দুই বিপরীত চিন্তাধারার এই ঐতিহাসিক চরিত্র দু’টিকে মঞ্চের এক জায়গায় এনে (কখনও কল্পনায়) দেবাশিস শুধু সময় ও প্রেক্ষিত নিয়ে পরীক্ষা করলেন না, দু’টি প্রান্তিক ভাবাদর্শের এক কাল্পনিক মিলন ঘটালেন। এই প্রযোজনার বিশেষত্ব এখানেই। প্রায় স্বচ্ছ পর্দা টাঙিয়ে মঞ্চের বিভাজন যেমন দৃষ্টিনন্দন, তেমনি আলোর ব্যবহার। দুর্গের ছাদে মুহাম্মদ শাহর নির্মল আকাশে উড়ন্ত তারাদের যে সৌন্দর্য দেখার দৃশ্যটিকে দেবাশিস অ্যাকাডেমির মঞ্চ নয়, পুরো হলের মধ্যে প্লানেটোরিয়ামের মতো করে উপস্থিত করেছেন।

সবচাইতে উপযোগী হয়েছে “আল্লাহ হে আল্লাহ…” সুফি গানটির ভাঙা ভাঙা ব্যবহার। তাও আবার সঠিক মুহূর্তগুলোয়। পরিচালক যদি সঞ্জীব সরকার (নাদির শাহ) বা তথাগত চৌধুরীর (মুহাম্মদ) মতো অভিনেতা না পেতেন, তাহলে এই প্রযোজনা এমন উচ্চতায় ওঠা সম্ভব হত না। হ্যাঁ, সঞ্জীবকে দু-একটি জায়গায় একটু নিচু লয়ে আনতে পারলে আরও ভাল হয়। তথাগত একেবারেই পারফেক্ট। বাকিদের মধ্যে সায়ন্তন মিত্র (উবাইদুল্লাহ), সুস্নাত ভট্টাচার্য (রেজাকেলি) এবং প্রায় সক্কলেই নির্দেশকের নির্দেশ মতোই ভাল কাজটি করে গিয়েছেন। দেবাশিসের অন্যান্য প্রযোজনার মতো এই ‘উড়ন্ত তারাদের ছায়া’ আবারও দেখা যায় বৈকি!

[আরও পড়ুন: নগ্ন ছবি পর্নসাইটে ছড়ানোর হুমকি! ‘শিবপুর’ সিনেমার প্রযোজকের মেল প্রকাশ করলেন স্বস্তিকা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement