গৌতম ব্রহ্ম: গঙ্গা ভাঙন রোধে কেন্দ্রীয় সাহায্য চেয়েও মেলেনি। এবার তাই নয়া উপায় উদ্ভাবন করে নদী ভাঙন রোধে নামল রাজ্যের সেচ দপ্তর। বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি বাঁশের খাঁচা ‘পরকো’-য় ইট ভরে ভাঙন রোধের কাজে ব্যবহার হচ্ছে।
উদয়নারায়ণপুরের জগদীশপুরে হুগলী নদী ও মহিষাদলের দনিপুরে রূপনারায়ণের ভাঙন ঠেকাতে ইতিমধ্যেই পরকো ব্যবহার হয়েছে। সেচ দপ্তরের দাবি, মাটির বস্তা, ইঁটের টুকরোর থেকে এই পরকো অনেক বেশি কার্যকরী। এই পদ্ধতিতে খাঁচার মধ্যে ইট ভরে জলে বসানো হয়। খাঁচার আকৃতি বিশেষ ধরনের হ্ওয়ার কারণে খুব সহজেই জলের স্রোত প্রতিহত করা সম্ভব।
উল্লেখ্য, নদী গর্ভে চলে যাওয়া হাওড়ার উলুবেড়িয়ার জগদীশপুর বাঁশতলায় প্রায় ৬০ মিটার নদী বাঁধ মেরামতিতে এই বাঁশের খাঁচা ব্যবহার করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ, জলের স্রোত এবং নদীর পাড় ঘেঁষে বড় বড় মালবাহী জাহাজ যাতায়াতের ফলে জলের ধাক্কায় বাঁধে ব্যবহৃত বস্তা ও ইট নদী গর্ভে চলে যায়। কিন্তু বাঁশের খাঁচার আকৃতি বিশেষ ধরনের হওয়ায় সহজে জলের স্রোত প্রতিহত হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: আচমকা অশান্ত ভাঙড়ের বাজারে রাজ্যপাল, কথা সবজি বিক্রেতাদের সঙ্গে, জানলেন দরদাম]
একই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে দনিপুরের কাছে রূপনারায়ণে। এখানে নদের গভীরতা বেশি হওয়ায় জলস্রোত বেশি। ফলে বারবার ভেঙে যায় ঐ অংশের নদী পাড়। তাই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সেচ দপ্তর ভাঙ্গন রুখতে পাড় বরাবর বাঁশের খাঁচা ফেলেছে। নদী বাঁধ বরাবর ১৮০ মিটার ক্ষয়ে যাওয়া অংশে, পাড় থেকে নদীর দিকে চারস্তরে ৩০ মিটার চওড়া বাঁশের খাঁচা দেওয়া হচ্ছে। প্রথম স্তরে নিচ থেকে চারটি, দ্বিতীয়স্তরে তিনটি, তৃতীয় স্তরে দুটি এবং চতুর্থ স্তরে একটি করে খাঁচা ফেলা হচ্ছে। আসলে বাঁশের খাঁচা হওয়ায় নদীর স্রোত সরাসরি ধাক্কা দিতে পারছে না পাড়ে। এতে ভাঙন যেমন কমছে, তেমনি পলি সঞ্চয়ও হচ্ছে। এমনই মত বিশেষজ্ঞদের। নদী পাড়ের বাসিন্দারা আশায় বুক বাঁধছে, বাঁশের খাঁচা হয়তো এবার তাঁদের দুঃখ দূর করতে সাহায্য করবে।