সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পের আওতায় আসার সুবাদে পর্যটন আরও ডানা মেলতে চলেছে পুরুলিয়ায়। বড়দিনের আগে একই সঙ্গে ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পে জেলার চারটি পর্যটন প্রকল্পের উদ্বোধন হয়। সেই সঙ্গে মানবাজার টুরিজম সার্কিটের দরজা খুলে গেল। এই সার্কিটে রয়েছে পুঞ্চা ব্লকের বদড়া জীববৈচিত্র ও প্রজাপতি উদ্যান, মানবাজার-১ ব্লকের জিতুজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের হাতিপাথর পর্যটনকেন্দ্র ও বরাবাজারের ইকো পার্ক।
নবরূপে খোলার পর লাখরা প্রজাপতি উদ্যানে পর্যটকের ঢল নামে। আসলে এই পর্যটন প্রকল্পে জলাধারের কোলে ফুলে-ফুলে উড়ে বেড়াচ্ছে লাইম বাটারফ্লাই, গ্রেম ব্লু, লেমন পেন্সি, কমন ব্যারনের মতো প্রায় ২৫টির বেশি স্থানীয় প্রজাতির ৪০০ রকমের রংবাহারি প্রজাপতি। শুক্রবার রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিভাগের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুর হাত ধরে নবরূপে এই পর্যটন প্রকল্পের উদ্বোধন হয়। অনুষ্ঠানে ছিলেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, সহ-সভাধিপতি প্রতিমা সরেন ও জেলাশাসক রাহুল মজুমদার, বাঘমুন্ডির বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো, পুরুলিয়া জেলা পরিষদের শিক্ষা-সংস্কৃতি-তথ্য-ক্রীড়া স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ গুরুপদ টুডু।
[আরও পড়ুন: গ্রাহক নিজে না গেলেও এবার রেশন তুলতে পারবেন ‘নমিনি’, কীভাবে জানেন?]
এ ছাড়া এদিন কাশীপুরের পাহাড়পুর ‘মাটির সৃষ্টি’ পর্যটন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন জেলাশাসক। চারটি আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামের পরিযায়ী পরিবারগুলিকে বিকল্প আয়ের পথ খুলে দিতেই পুঞ্চার এই বদড়া ‘মাটির সৃষ্টি’-র পথ চলা। তার মধ্যেই রয়েছে জীববৈচিত্র ও প্রজাপতি উদ্যান। পর্যটনের সঙ্গে বদড়ায় এদিন যান্ত্রিক ঢেঁকিছাঁটা চালকলেরও শিলান্যাস হয়। যার মাধ্যমে বিকল্প আয়ের পথ খুলে যাবে এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকা উপভোক্তাদের। কী নেই এই বদড়া ‘মাটির সৃষ্টি’ পর্যটন প্রকল্পে! প্রজাপতি বাগানের পাশাপাশি ভেষজ উদ্যানে ২২ টি প্রজাতির তিন হাজারের বেশি ভেষজ উদ্ভিদ ছাড়াও রয়েছে সাথী ফসল হিসাবে সিট্রানেলা লেমন ঘাস।
শিশুদের হরেকরকম খেলনা দিয়ে সাজানো শিশু উদ্যান ও ড্যামের জলে নৌকাবিহারের সুযোগ থাকছে l রয়েছে কেমোমাইল নার্সারি, ইন্ডিয়ান রানার হাঁসের খামার, স্বনির্ভর মহিলা মাশরুম চাষ। এ ছাড়া আম, সবজিবাগান তো রয়েইছে l তাই এই বৃহৎ পর্যটন প্রকল্প ঘুরে দেখার জন্য ঘোড়ায় টানা ‘মাটির সৃষ্টি’ রথ l পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “১২ একর জমিকে ঘিরে আমাদের এই ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্প l” জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, “পুরুলিয়ার পর্যটন এখন বড় সম্পদ l যাকে ঘিরে আর্থ-সামাজিক অবস্থার বদলের ছবি জেলায় l তাই ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পে আমরা পর্যটনকে জুড়ে দিয়েছি।”