সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন আগেই৷ ক্রাইস্টচার্চের ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর শুধু মৌখিক আশ্বাসেই থেমে থাকেননি নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডের্ন৷ নিহত মুসলিম পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে একেবারে তাঁদেরই একজন হয়ে গিয়েছিলেন তিনি৷ শোকপ্রকাশে মাথায় হিজাবের মতো করে পরা কালো স্কার্ফ, কালো পোশাক৷ যাতে তাঁরা কেউ নিজেদের বিচ্ছিন্ন মনে না করেন৷ প্রধানমন্ত্রীর দেখানো সেই পথেই এগিয়ে এলেন নিউজিল্যান্ডের অন্যান্য সরকারি মহিলা কর্মীরা৷
চিনে পর্যটকদের বাসে ভয়াবহ আগুন, মৃত অন্তত ২৬
শুক্রবার দেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈঠকেও হিজাব পরিহিত হয়ে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী৷ একই পোশাকে দেখা গেল দেশের সমস্ত মহিলা পুলিশকর্মীদের৷ বেশিরভাগের মাথাতেই ছিল কালো স্কার্ফ৷ কেউ বা মাথা ঢেকেছিলেন বেগুনি, আকাশি হিজাবে৷ অকল্যান্ডের মহিলা চিকিৎসকদের একটি দলও প্রধানমন্ত্রীর আচরণে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্কার্ফ পরে রাস্তায় বেরিয়েছেন৷ এর অবশ্য আরও একটা কারণ আছে৷ এদিন ক্রাইস্টচার্চের মুসলিম প্রতিনিধিদের বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানোর পর দু-একজন মহিলা সেখানে যোগ দিতে আতঙ্কিত বোধ করছিলেন৷ এক মহিলার কথায়, ‘ঘরে বাইরে বেরোতে ভয় পাচ্ছি৷ আমার মাথায় হিজাব দেখে মুসলিম বলে যদি ফের সন্ত্রাসবাদীরা টার্গেট করে!’ একথা শোনার পরই অকল্যান্ডের মহিলা চিকিৎসক টায়না অ্যাশম্যান সব মহিলাদের কাছে আবেদন জানান, তাঁরা সবাই যেন হিজাবে মাথা ঢেকে বেরোন৷ যাতে আলাদা করে কাউকে মুসলিম বলে চিহ্নিত করে টার্গেট না করা যায়৷ নিঃসন্দেহে মানবিক উদ্যোগ৷ অ্যাশম্যান বলেন, ‘আমি বলতে চাই, আমরা আপনাদের সঙ্গেই আছি৷ এটা আপনাদের ঘরের মতোই, এই বিশ্বাস যেন থাকে৷ আমরা আপনাদের ভালবাসি, শ্রদ্ধা করি৷’
ব্রেক্সিট জটে জেরবার মে, সময়সীমা বাড়াতে রাজি ইউরোপীয় ইউনিয়ন
অ্যাশম্যানের আবেদনে সাড়া দিয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মহিলারা৷ ক্রাইস্টচার্চ তো বটেই, অকল্যান্ড, ওয়েলিংটনজুড়ে মহিলারা হেডস্কার্ফ পরিহিত৷ ‘পাশে আছি’, বার্তা দিতে নিজেদের স্কার্ফ পরিহিত ছবি তুলে তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করেছেন৷ সম্প্রতি ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদের সামনের মাঠে নিহতদের যে স্মরণসভা হয়েছে, তাতেও হিজাবে মাথা ঢাকা ছিল অনেকের৷ এমনকী শিশুকন্যাদের অনেকেরই মাথায় স্কার্ফ পরিয়ে দিয়েছিলেন মায়েরা৷ স্থানীয় বাসিন্দা বেল সিবলির কথায়, ‘আমি কেন স্কার্ফ পরেছি জানেন? মুখ্য কারণ একটাই৷ যে হাতে অস্ত্র তুলেছে আর যাকে টার্গেট করেছে, তাদের মাঝে আমি বাধা হয়ে দাঁড়াতে চাই৷ যাতে দেশের মহিলাদের মধ্যে কোনও তফাৎ ধরা না পড়ে৷’ একটি দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর এমন আক্রমণের পর তাঁদের পাশে থাকতে এবং একতার বার্তা দিতে প্রশাসনের এমন পদক্ষেপ সাম্প্রতিককালে নজিরবিহীন, তা মানছেন সবাই৷
The post সন্ত্রাসী হামলায় নিহত পরিবারের পাশে দাঁড়াতে প্রথা ভাঙলেন নিউজিল্যান্ডের মহিলারা appeared first on Sangbad Pratidin.