বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: নতুন জীবনের শুরুতে মুমূর্ষ রোগীদের পাশে নবদম্পতি। বিয়ের পরদিনই আয়োজন করেছিলেন থ্যালাসেমিয়া চিহ্নিতকরণ শিবিরের। বউভাতের সকালে আয়োজন করেছিলেন রক্তদান শিবিরের। সবমিলিয়ে নতুন জীবনের শুরুটাই অন্যভাবে লিখলেন শান্তিপুরের দম্পতি।
নবদম্পতির বক্তব্য,”নতুন জীবনের শুরুতে বেশকিছু মুমূর্ষু রোগীকে যাতে রক্ত জোগান দেওয়ার মাধ্যমে বাঁচিয়ে তুলতে পারি, এমন ভাবনা থেকেই বউভাতের দিন রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। তার আগেরদিন থ্যালাসেমিয়া চিহ্নিতকরণ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। আমাদের বিয়েতে নিমন্ত্রিত বন্ধুবান্ধব,আত্মীয় পরিজনদের মধ্যে অনেকেই উৎসাহিত হয়ে রক্তদান করেছেন। ২৫ জন স্বেচ্ছায় রক্তদান করেছেন। আগামিদিনে এমন ধরনের আরও বেশকিছু কাজ করার ইচ্ছে আমাদের রয়েছে।”
[আরও পড়ুন: কুণাল ঘোষের সঙ্গে বৈঠকে সুফল, প্যানেল প্রকাশের পরই ধরনা তুলছেন ২০০৯’র চাকরিপ্রার্থীরা]
শান্তিপুরের পীরেরহাট এলাকার বাসিন্দা সত্যজিৎ দাস কুলিয়া কালীতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। দেখাশোনা করে সামাজিক মতে তাঁর সঙ্গে বিয়ে হয়েছে নাকাশিপাড়া থানার ধর্মদা গ্রামের তনুজা দাসের। গত ২৭ নভেম্বর ছিল বিয়ের অনুষ্ঠান। সত্যজিৎ ধর্মদা গ্রামে তনুজাকে বিয়ে করতে গিয়েছিলেন। পরদিন নববধূকে বাড়িতে নিয়ে এসে আচার্যপাড়ায় তাঁরই এক পরিচিতর দোকানে করেছিলেন থ্যালাসেমিয়া চিহ্নিতকরণ শিবির। নিজের উৎসাহেই সেই শিবিরে হাজির হয়েছিলেন নববধূও।
২৯ নভেম্বর ছিল তাঁদের বউভাতের অনুষ্ঠান। শান্তিপুরের ডাবরেপাড়ায় লজে সেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ছিল। শান্তিপুরের ‘সেতু’ নামে একটি সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে আগে থেকেই যুক্ত ছিলেন সত্যজিৎ। তাই নিজের নতুন জীবন শুরুর সময়কে স্মরণীয় করে রাখতে নবদম্পতির মাথায় আসে রক্তদান শিবির আয়োজনের চিন্তাভাবনা। সত্যজিৎ জানিয়েছেন, “রক্তের অভাব রয়েছে। সামাজিক কাজের সঙ্গে আমি অনেক আগে থেকেই যুক্ত রয়েছি। তাই নতুন জীবন শুরুর আগে মুমূর্ষু মানুষের কথা ভেবে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছা ছিল। তাই থ্যালাসেমিয়া চিহ্নিতকরণ শিবির এবং রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছিলাম। বিয়েতে নিমন্ত্রিত বন্ধুবান্ধব,আত্মীয়স্বজন অনেকেই উৎসাহী হয়ে রক্তদান করেছেন। আগামীদিনে আরও এরকম সামাজিক কাজ করতে চাই।”
[আরও পড়ুন: থিম কান্ট্রি স্পেন, কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার দিনক্ষণ জানিয়ে দিল গিল্ড]
নববধূ তনুজা দাস নতুন শাড়িতে সজ্জিত হয়ে হাজির ছিলেন রক্তদান শিবিরের অনুষ্ঠানে। তাদের বিয়েতে এমন ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় ভীষণ খুশি তনুজা দাস। তিনি জানিয়েছেন, “আমাদের নতুন জীবন শুরুর সময় মুমূর্ষু মানুষদের পাশে থাকার চিন্তাভাবনা থেকেই বিয়ের অনুষ্ঠানের মধ্যে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছিলাম। কারণ, মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে একমাত্র মানুষই।” সকাল ১১টা থেকে রক্তদান শিবির শুরু হয়ে দুপুর অবধি চলে। সেই লজেই সন্ধেয় হয় বউভাতের অনুষ্ঠান। রক্তদাতারা রক্তদানের মাধ্যমেই নববধূকে করেছেন আশীর্বাদ।