হোসে ব্যারেটো: গ্রুপের শেষ ম্যাচে ক্যামেরুনের কাছে হারটা ব্রাজিল ফ্যানদের কাছে তেতো গেলার মতো লাগছে। বিশ্বকাপের মঞ্চ বলে হয়তো এই হারটা অপ্রত্যাশিত লাগছে আরও বেশি করে। কিন্তু আমি অবাক নই। ফুটবল খেলাটা আগের চেয়ে অনেকটাই বদলে গিয়েছে। মডার্ন ফুটবলে এখন আর দলগুলোর মধ্যে বেশি ফারাক নেই। যারা বিশ্বকাপ খেলছে, সেই দলগুলো শক্তির বিচারে একে অপরের খুব কাছাকাছি। তাই ক্যামেরুন ব্রাজিলকে হারিয়ে দিয়েছে বলে সেটা চমক, তা মনে করি না।
এবারের বিশ্বকাপে এমন দৃশ্য খুব বিরল, তাও নয়। দক্ষিণ কোরিয়া পর্তুগালকে হারিয়েছে। জাপানের কাছে হেরেছে জার্মানি, স্পেন। সৌদি আরব আর্জেন্টিনাকে হারিয়েছে। আবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স টিউনিশিয়ার কাছে হেরে গিয়েছে। আমার মতে, এটা ফুটবলের এক নিয়মিত প্রক্রিয়া। প্রতিটি দল এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে নিজেদের উন্নতির চেষ্টা করে। সেই প্রক্রিয়া ধরেই দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, মরক্কোর মতো দল তাদের সেরাটা বিশ্বকাপে (FIFA World Cup 2022) তুলে ধরছে। আমরা তা দেখে মুগ্ধ হচ্ছি।
[আরও পড়ুন: অভিষেককে জবাব দিতে পালটা প্রস্তুতি বিজেপির, কাঁথিতে সভা করবেন শুভেন্দু]
তাহলে ক্যামেরুনের কাছে ব্রাজিলের (Brazil Football Team) হারে চিন্তার কিছুই নেই? অবশ্যই আছে। সেটা হল ব্রাজিলের অ্যাটাক লাইনের গোলখরা। ক্যামেরুনের গোল লক্ষ্য করে ২১টা শট নিয়েছে ব্রাজিল। শট অন টার্গেট সাত। কিন্তু গোল শূন্য। এটা সত্যি চিন্তার বিষয়। প্রচুর গোলের সুযোগ তৈরি হচ্ছে, কিন্তু গোল হচ্ছে না। নকআউট পর্যায়ে এই সমস্যা জিইয়ে থাকলে কিন্তু ভুগতে হবে দলকে। আমার বিশ্বাস, প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে নামার আগে তিতে নিশ্চয় এই দিকটায় নজর দেবেন। ভুললে চলবে না, নকআউট কিন্তু অন্য স্টেজ, ভিন্ন লড়াই। সেখানে ভুলের কোনও মাফ নেই। প্রতিপক্ষ সুযোগটুকু দেবে না।
ব্রাজিলের জন্য ভাল ব্যাপার, নেইমার (Neymar) সুস্থ হয়ে উঠেছে। ও দলের আসল প্লেয়ার। নকআউট পর্বে ওকে দরকার। তাছাড়া ফরোয়ার্ড লাইনে রিচার্লিসন, রাফিনহারা প্রথম একাদশে ফিরবে, যাদের ক্যামেরুন ম্যাচে বিশ্রাম দিয়েছিলেন ব্রাজিল কোচ। ফলে পরের ম্যাচে দলের চেহারাটা বদলে যাবে। গ্রুপ স্টেজে প্রথম দু’টো ম্যাচে দল জিতেছিল। ফলে তিতের সামনে সুযোগ ছিল বাকিদের ক্যামেরুন ম্যাচটায় দেখে নেওয়ার। তা কাজে লাগিয়েছেন তিতে। প্রায় পুরো দলটাই ব্রাজিল কোচ বদলে ফেলেছিলেন। নতুন ডিফেন্স লাইনআপ নিয়ে ক্যামেরুন ম্যাচটা খেলল দল। হারলেও আমি ডিফেন্সকে দায়ী করব না। কারণ পরের ম্যাচে থিয়াগো সিলভা, মার্কুইনোস ফিরলে নিশ্ছিদ্র দেখাবে ব্রাজিলের রক্ষণকে। তবে ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে মাঝমাঠে ক্যাসেমিরোকে রাখলে পারতেন তিতে। নেতৃত্বদানের অভাবটা বারবার চোখে পড়ছিল। ক্যাসেমিরো থাকলে সেটা হত না।
সব ভুলে এখন ব্রাজিলকে ফোকাস করতে হবে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে। দক্ষিণ কোরিয়া কিন্তু দারুণ ছন্দে রয়েছে। পর্তুগালকে হারিয়ে দিয়েছে। উরুগুয়েকে ছিটকে ওরা নকআউটে জায়গা করে নিয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, প্রত্যাশার চাপ ওদের উপর নেই। বিশ্বকাপের এই অভিযানটা ওরা খুব উপভোগ করছে। সন হিউন-মিনদের থামাতে গেলে তাই আরও সতর্ক হতে হবে তিতের ব্রাজিলকে। আর আজ শুরুতেই গোল করা দরকার।