সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লকডাউনের পর অর্থনীতিকে্ চাঙ্গা করতে ফের বেসরকারিকরণে জোর মোদি সরকারের। এবার থেকে কয়লা -সহ খনিজ সম্পদ উত্তোলন, বিমান পরিযেবা থেকে মহাকাশ গবেষণা সর্বত্রই বেসরকারি বিনিয়োগকে স্বাগত জানাল কেন্দ্র। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে মেক ইন ইন্ডিয়াতে জোর দিয়েও অবশ্য অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি শেয়ার বাজারে ছাড়ার কথা ঘোষণা করা হল। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগের সীমাও বাড়ানো হল। ফলে আত্মনির্ভর ভারতের ক্ষেত্রে বেসরকারিকরণই যে মোদি সরকারের মূলমন্ত্র তা এদিন স্পষ্ট করে দিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ।
লকডাউনের জেরে মার খাচ্ছে অর্থনীতি। তাকে চাঙ্গা করতে ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণার কথা জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই আর্থিক প্যাকেজের বিস্তারিত ব্যাখা গত তিনদিন ধরে দিচ্ছিলেন অর্থমন্ত্রী। যার অধিকাংশটাই ছিল ঋণনির্ভর। নগদ জোগানের কথা ছিল না বললেই চলে। এদিন এবার সরাসরি বেসরকারিকরণের কথা জানান মন্ত্রী। এদিন আটটি ক্ষেত্রের সংস্কার করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে কয়লা, খনিজ, বিমানবন্দর, বিদু্ত সরবরাহ সংস্থা, এয়ারস্পেস, মহাকাশ গবেষণা, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে অস্ত্র নির্মাণ-সহ একাধিক ক্ষেত্র। প্রতিটি ক্ষেত্রে ডেভলপমেন্ট সেল তৈরি হবে। এর আগে কৃষি, পশুপালন, মাছচাষি, হকার, ক্ষুদ্রশিল্প ও চাকুরিজীবীদের জন্য একাধিক পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী। যদিও বেশিরভাগটাই ছিল ঋণ নির্ভর। অর্থমন্ত্রীর কথায়, “বহু ক্ষেত্রে নীতির সরলিকরণ প্রয়োজন। আত্মনির্ভরতার জন্য মেক ইন ইন্ডিয়াতে জোর দেওয়া হচ্ছে।”
- দ্রুত বিনিয়োগের জন্য নিয়ম নীতি সংস্কার করছে কেন্দ্র। শিল্পের পরিকাঠামো গড়তে জোর। জমি ব্যাংক তৈরি হচ্ছে। বিনিয়োগ টানার আকর্ষণীয় নীতি অনুযায়ী রাজ্যগুলিকে ব়্যাংক দেওয়া হবে।
- কয়লা খননে থেকে সরকারি একচেটিয়া অধিকার সরানো হল। বেসরকারি সংস্থা বিনিয়োগ করতে পারবে।এটা হবে রাজস্ব অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে। যারা দ্রুত কয়লা খনন করতে পারবে, তাদের জন্য ইনসেনটিভ থাকছে। কোল বেড মিথেন উত্তোলনের ক্ষেত্রেও বেসরকারি সংস্থা অংশ নিতে পারবে। কয়লা খননের পরিকাঠামো উন্নয়নে ৫০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ।
- মিনারেল বা খনিজ সম্পদ খনন ও উত্তোলনেও বেসরকারি বিনিয়োগকে স্বাগত জানাল কেন্দ্র সরকার।অ্যালুমিনিয়াম শিল্পকে বাড়াতে বক্সাইট ও কয়লা খনির যৌথ নিলাম করা হবে। ক্যাপটিভ ও নন-ক্যাপটিভ খনি আলাদা করা হবে। যাতে সম্পদের সর্বোচ্চ পরিমাণ ব্যবহার করা যায়। ৫০০ টি খনিকে নিলাম করা হবে।
- প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরি মেক ইন ইন্ডিয়াতে জোর। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের তালিকা তৈরি্ করবে। সেগুলি ভারতে তৈরি হবে। বেশকিছু অস্ত্র আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে।
- অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের কর্পোরাটাইজেশন। এই বোর্ডের শেয়ার বাজারে ছাড়া হবে। দেশের নাগরিকরা তা কিনতে পারবেন।
- প্রতিরক্ষায় বিদেশি বিনিয়োগের সীমা ৪৯ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৪ শতাংশ করা হল।
- অসামরিক উড়ানের সময় ও জ্বালানি কমাতে জোর। এয়ার স্পেসের নীতি সরলীকরণ করা হবে। আরও সামরিক উড়ান বিভাগের সঙ্গে কথা বলে সাধারণ বিমানের জন্য আরও এয়ারস্পেস খুলে দেওয়া হবে।
- আরও বিশ্বমানের বিমানবন্দর তৈরি হবে পিপিপি মডেলে।
- আরও ৬টি বিমানবন্দরকে নিলাম করা হবে। দু দফা মোট ১২ টি বিমানবন্দরে নিলামে ১৩ হাজার কোটি টাকা আসবে। পরে আরও ছটি বিমানবম্দরকে নিলামের জন্য চিহ্নিত করা হবে।
- কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিদ্যুত সরবরাহ সংস্থাগুলির বেসরকারিকরণ।স্মার্ট মিটার প্রক্রিয়া চালু।
- মহাকাশ গবেষণা ও কর্মকাণ্ডে বেসরকারি লগ্নি। মহাকায যাত্রা বা গ্রহের খোঁদের মত ক্ষেত্রেও বেসরকারি সংস্থা অংশ নিতে পারবে। এর জন্য নয়া নীতি আনা হচ্ছে।ইসরোর সুবিধা পাবে বেসরকারি সংস্থাগুলিও।
- আণবিক শক্তির রিসার্চ রিয়েক্টর ক্ষেত্রেও পিপিপি মডেল।
The post নগদ জোগানের দিশা নেই, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বেসরকারিকরণই ভরসা কেন্দ্রের appeared first on Sangbad Pratidin.