সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: নীতীশ কুমার কি এবার ইউপিএ চেয়ারপার্সন বা কনভেনর হওয়ার পথে? বুধবার দিল্লির ১০, রাজাজি মার্গে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে (Malliarjun Kharge) এবং রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) সঙ্গে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের পর সেই সম্ভাবনা ঊজ্বল হচ্ছে। নীতিশ কুমারকে ইউপিএ চেয়ারপার্সন করে লোকসভা নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ হতে কোনও সমস্যা নেই কংগ্রেসের। সমমনস্ক বাকি দলগুলির সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনা করে তাদের বোঝানো হবে। এই বার্তাই নাকি বুধবার মল্লিকার্জুন খাড়গের বাসভবনে হওয়া বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে। এমনটাই শোনা যাচ্ছে কংগ্রেস সূত্রে। তবে তৃণমূল কংগ্রেস, এনসিপি-সহ (NCP) অন্য দলগুলির মত পেতে নীতীশকেও যে পরিশ্রম করতে হবে, সেই বার্তাও নাকি স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে বৈঠকে।
শোনা যাচ্ছে, অসুস্থতার কারণে আগামী বছরের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi)। সেক্ষেত্রে নীতীশকেই ইউপিএ-র চেয়ারপার্সন করতে কংগ্রেসের যে কোনও আপত্তি নেই, সেই ইঙ্গিত এদিন বৈঠকে দেওয়া হয়েছে। অন্য দলগুলিকে বোঝানোর চেষ্টা করা হবে, সেই কথাও বলা হয়েছে কংগ্রেসের তরফে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শরদ পাওয়ার, উদ্ধব ঠাকরে বা স্টালিন, কেসিআর, কেজরিওয়ালদের বোঝানোর জন্য নীতীশ-তেজস্বীদেরও উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। নীতীশকে (Nitish Kumar) ইউপিএ চেয়ারপার্সন করা হলে সবথেকে বড় রাজনৈতিক সুবিধা হবে তেজস্বীর (Tejaswi Yadav)। কারণ সেক্ষেত্রে তিনিই বসবেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর আসনে।
[আরও পড়ুন: কর্ণাটকে দ্বিতীয় দফার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ বিজেপির, বাদ ১৯ বিধায়ক, আরও বাড়ছে অসন্তোষ]
অন্যদিকে, জাতীয় রাজনীতিতে উদারতার প্রতীক হিসাবে নিজেদের তুলে ধরার পাশাপাশি কোনওভাবে মহাজোট ফ্লপ হলে তার দায়ও আসবে না কংগ্রেসের ঘাড়ে। পাশাপাশি যদি সত্যিই বিরোধী জোট ক্ষমতায় আসে, সেক্ষেত্রে মনমোহন আমলের উদাহরণ টেনে রাহুলকে প্রধানমন্ত্রী করার একটা শেষ চেষ্টা করলেও করতে পারে। বলা হতে পারে, ইউপিএ (UPA) চেয়ারপার্সনকেই যে প্রধানমন্ত্রী হতে হবে, তার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। তবে কোন ফর্মুলায় অন্য হেভিওয়েটদের সমর্থন পাওয়া যায়, আদৌ পাওয়া যায় কিনা, সেদিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের।
[আরও পড়ুন: হনুমান জয়ন্তীর অশান্তির আঁচ এবার ওড়িশায়, দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে জখম ১০ পুলিশকর্মী]
কংগ্রেসের পক্ষে নীতীশ-তেজস্বীদের (Tejaswi Yadav) একসঙ্গে পাশে পাওয়া বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সেই তালিকায় নীতীশ কুমারও ছিলেন। এমনকী একটা সময় বিরোধী জোটের নেতা হিসাবে নিজের নাম ভাসিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। সেই তিনিই অবশেষে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলালেন। গতকাল রাতেই আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়ালের (Arvind Kejriwal) সঙ্গে দেখা করতে যান নীতীশ কুমার ও তেজস্বী যাদব। বৃহস্পতিবার আবার সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।