নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনও মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে এথিক্স কমিটির তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে কোনওরকম আলোচনা হল না। অথচ এথিক্স কমিটির রিপোর্ট নাকি স্পিকার ওম বিড়লার কাছে জমা পড়ে গিয়েছে। মঙ্গলবারও এথিক্স কমিটির সদস্য তথা বিজেপি সাংসদ অপরাজিতা সারঙ্গী জানিয়েছেন, স্পিকারের কাছে তাঁরা বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। এ নিয়ে কোনও আলোচনা হলে নিজেদের পক্ষ রাখতেও তৈরি এথিক্স কমিটি।
প্রশ্ন হচ্ছে, এথিক্স কমিটি নিজেদের রিপোর্ট দিয়ে দিয়েছে। কেন্দ্রের হাতে সময়ও রয়েছে। তাহলে কেন মহুয়ার বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করে তাঁর সাংসদ পদ খারিজ করতে চাইছে না কেন্দ্র? তাহলে কি মহুয়া ইস্যুতে খানিক ধীরে চলো নীতি নিচ্ছে বিজেপি। কারণই বা কী? বিজেপি সূত্রের খবর, মহুয়ার বিরুদ্ধে যে রিপোর্ট এথিক্স কমিটি জমা দিয়েছে, সেটা নিয়ে বৃহস্পতিবার আলোচনা হতে পারে।
[আরও পড়ুন: শহরে সলমন-অনিল, নেতাজি ইন্ডোরে ব্যস্ততা তুঙ্গে, এক নজরে দেখে নিন কী কী ঘটছে?]
আসলে একাধিক কারণে বিজেপি খানিক পিছিয়ে গিয়েছে। প্রথমত, একটা সময় এই ইস্যুতে মহুয়াকে একা মনে হচ্ছিল। কিন্তু এখন আর কৃষ্ণনগরের সাংসদ একা নন। তাঁর নিজের দল তৃণমূল তো বটেই, কংগ্রেস-সহ অন্য বিরোধীরাও মহুয়ার পাশে। দ্বিতীয়ত, এথিক্স কমিটি সরাসরি কোনও সাংসদের পদ খারিজের সুপারিশ করতে পারে কিনা সেটা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ সাংসদ পদ খারিজের অধিকার রয়েছে শুধু সংসদের প্রিভিলেজ কমিটির। সেক্ষেত্রে কেন্দ্র আইনি বিপাকে ফাঁসতে পারে।
এর পিছনে আরও কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, তিন রাজ্যে বিরাট জয়ের রেশ ধরে রাখতে চাইছে গেরুয়া শিবির। এই সময় মহুয়ার পদ খারিজ হয়ে গেলে প্রচারের আলো মহুয়ার দিকে ঘুরে যেতে পারে। সেটা বিজেপি চাইছে না। তাছাড়া, বিজেপি সাংসদ রমেশ বিধুরির বিরুদ্ধেও এথিক্স কমিটি তদন্ত করছে। সে নিয়ে এখনও রিপোর্টই পেশ হয়নি। অথচ পরে তদন্ত শুরু হয়ে মহুয়া শাস্তি পেয়ে গেলে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। সম্ভবত সেকারণেও মহুয়া ইস্যুতে ধীরে এগোচ্ছে বিজেপি। তাৎপর্যপূর্ণভাবে তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট যেদিন পেশ হওয়ার কথা, সেদিনই আবার বিধুরিকেও তলব করেছে এথিক্স কমিটি।