বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: বিজেপিকে হারাতে শীর্ষনেতৃত্বের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। সেক্ষেত্রে লোকসভায় তৃণমূলের সঙ্গে সম্মানজনক বোঝাপড়ায় তাঁদের আপত্তি থাকবে না বলে হাইকমান্ডের কাছে অবস্থান স্পষ্ট করল প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। প্রদেশ স্তরে নয়, তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলুক হাই কমান্ড। মল্লিকার্জুন খাড়গে (Mallikarjun Kharge) ও রাহুল গান্ধীকে (Rahul Gandhi) সাফ জানিয়ে দিল বাংলা কংগ্রেস
একান্তই জোট না হলে বিজেপিকে হারানোর উপায় জানতে চান রাহুল গান্ধী। মঙ্গলবার ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে একাধিকবার সোনিয়া গান্ধী ও রাহুলের সঙ্গে একান্তে কথা বলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তারপরেই এদিনের বৈঠকের দিকে তাকিয়ে ছিল রাজনৈতিক মহল। যদিও বৈঠকে ঐক্যবদ্ধ প্রদেশ কংগ্রেসের ঐক্যবদ্ধ চেহারা তুলে ধরতে ব্যর্থ হন অধীর চৌধুরীরা। প্রদেশ সভাপতির বিরোধী গোষ্ঠীর নেতারা গরহাজির ছিলেন। বর্ষীয়ান প্রদীপ ভট্টাচার্য, আবদুল মান্নান, সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী, অমিতাভ চক্রবর্তী বা সন্তোষ পান্ডেরা বৈঠক এড়িয়ে যান।
[আরও পড়ুন: ভিডিও না তুললে…! উপরাষ্ট্রপতির ‘মিমিক্রি’ বিতর্কে ঘুরিয়ে রাহুলকেই কাঠগড়ায় তুললেন মমতা?]
জোট নিয়ে বাংলা কংগ্রেসের মনোভাব জানতে বুধবার প্রদেশ নেতৃত্বকে ডেকে পাঠান খাড়গে। সূত্রের খবর, বৈঠকে অধিকাংশ নেতাই জানিয়েছেন, তৃণমূলের সঙ্গে জোটে তাঁদের আপত্তি নেই। কিন্তু সেই জোট যেন সম্মানজনক শর্তে হয়। রাজ্য স্তরে জোট বা আসন সমঝোতার ব্যাপারে প্রদেশ কংগ্রেসের কথা কখনওই চলত না। হাইকম্যান্ড যা বলত তাই মেনে নিতে হত প্রদেশ কংগ্রেসকে। একমাত্র রাহুল গান্ধী কংগ্রেসের সহ-সভাপতি হওয়ার পর রাজ্য নেতাদের কথায় গুরুত্ব দিতে শুরু করেন। এবারও দেওয়াল লিখন স্পষ্টই ছিল। প্রদেশ নেতারাও বুঝতে পারছিলেন জাতীয় স্তরে বিরোধী ঐক্যের জন্য লোকসভা ভোটে তৃণমূলের সঙ্গে জোট চাইছে হাইকমান্ড। তাই আগাম আলোচনা করেই বৈঠকে যোগ দেন অধীর চৌধুরী, দীপা দাসমুন্সিরা। কিন্তু পাছে তাল কেটে যায় তাই অবস্থানের বিরোধিতা করতে পারেন এমন কাউকে প্রতিনিধি দলে রাখা হয়নি। ফলে একাধিক শীর্ষনেতা বৈঠকে গরহাজির ছিলেন। তবে মান্নান ও প্রদীপ ভট্টাচার্যকে বৈঠকে যোগ দিলে বললেও তাঁরা গরহাজির থাকেন। খাড়গে ও রাহুলের সামনে অধীর (Adhir Ranjan Chowdhury) ও দীপার সঙ্গে মতের অমিল হতে পারে আশঙ্কা থেকেই এঁরা বৈঠকে থাকেননি বলেই মত একাংশের।
[আরও পড়ুন: সাসপেন্ড আরও দুই সাংসদ, কার্যত বিরোধীশূন্য লোকসভা]
কয়েক মাস আগেই অধীরকে-পি চেল্লাকুমারকে পর্যবেক্ষক ও প্রদেশ সভাপতির চেয়ার থেকে সরানোর দাবিতে সোনিয়া ও রাহুলের দ্বারস্থ হন বিরোধী গোষ্ঠীর নেতারা। তারপরেও হাইকমান্ড কোনও উচ্চবাচ্য না করায় ক্ষোভে ফুঁসছেন তাঁরা। সেই কারণেই তাঁরা গরহাজির ছিলেন বলে মনে করছে দলের আরেক অংশ।