সুকুমার সরকার, ঢাকা: পুলিশের মারে গুরুতর আহত হয়ে রাজধানী ঢাকার একটি হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন কার্টুনিস্ট আহমেদ কবীর কিশোর (Cartoonist Kishore)। এই ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে এই ঘটনায় তড়িঘড়ি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। তৈরি হয় মেডিক্যাল বোর্ড। এবার সেই বোর্ড সাফ জানিয়েছে যে কিশোরের শরীরে আঘাতের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
[আরও পড়ুন: সন্ত্রাস দমনে মদত, প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন অসমের মুখ্যমন্ত্রীর]
২০২০ সালের ৬ মে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবীর কিশোরকে বাংলাদেশের (Bangladesh) এলিট বাহিনী র্যাব বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। তাঁর বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং গুজব ছড়িয়ে হিংসায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ এনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে পুলিশ। তারপরে জামিনে মুক্ত হয়ে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে গত ১০ মার্চ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অজ্ঞাত সদস্যদের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলা করেন কিশোর। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এম ইমরুল কায়েসকে কান, পা ও শরীরের অন্য অংশে আঘাত পেয়েছেন বলে জানান তিনি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ১৪ মার্চ তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালককে নির্দেশ দেয় আদালত। নির্দেশ মোতাবেক গত ২০ মার্চ ঢাকা মেডিকেল কলেজের ইএনটি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শেখ নুরুল ফাত্তাহ, অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ফখরুল আমিন খান ও মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মহম্মদ হাফিজ সরদার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদনে তাঁরা নির্যাতনের চিহ্ন না পাওয়ার কথা উল্লেখ করেন।
এদিকে, মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্ট নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অভিযোগ, চাপের মুখে পড়ে কিশোরের শরীরে আঘাত নেই বলে রিপোর্ট দিয়েছেন তদন্তকারীরা। প্রসঙ্গত, কার্টুনিস্ট কিশোর, লেখক ও উদ্যোক্তা মুশতাক আহমেদ, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন পরিচালক মিনহাজ মান্নান-সহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গত ৫ মে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে এলিট বাহিনী র্যাব। এর মধ্যে দিদারুল ও মিনহাজ এর আগে জামিনে মুক্তি পান। পুলিশের হেফাজতে থাকাকালীন তাঁর উপর প্রচণ্ড নির্যাতন চালানো হয় বলে দাবি করেন কিশোর।