সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০২০ সালের মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ। দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। সেই মাস থেকেই বর্ষীয়ান নাগরিকদের জন্য রেলের (Indian Railways) টিকিটে ভাতা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখনও পর্যন্ত সেই ভাতা বন্ধই রয়েছে। কিন্তু সাংসদ ও প্রাক্তন সাংসদদের জন্য ভাতা রয়েছে অব্যাহত। এই দুই বিপরীত চিত্র ঘিরে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে।
সম্প্রতি এক আরটিআইয়ের জবাবে কেন্দ্র জানিয়েছে, গত পাঁচ বছরে সাংসদ ও প্রাক্তন সাংসদদের রেলযাত্রায় যে ছাড় দেওয়া হয়েছে তার পরিমাণ ৬২ কোটি টাকা। আবার ২০২০ সালের মার্চ থেকে ধরলে এখনও পর্যন্ত বর্ষীয়ান নাগরিকদের টিকিটে বিশেষ ভাতা বন্ধ রাখায় রেলের ভাঁড়ারে ঢুকেছে দেড় হাজার কোটি টাকা।
সম্প্রতি একটি আরটিআইয়ের জবাবে লোকসভার সেক্রেটেরিয়েট জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, সাংসদ ও প্রাক্তন সাংসদদের ক্লেমের বিল অনুযায়ী ২০২১-২২ সালে ৩.৯৯ কোটি, ২০২০-২১ সালে ২.৪৭ কোটি, ২০১৯-২০ সালে ১৬.৪ কোটি টাকা, ২০১৮-১৯ সালে ১৯.৭৫ কোটি টাকা, ২০১৭-১৮ সালে ১৯.৩৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে কেন্দ্রের।
কিন্তু করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের পরেও বর্ষীয়ান নাগরিকদের ভাতা বন্ধই রাখা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ৭৬ বছরের জগন্নাথ গুপ্ত এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানাচ্ছেন, ”আমাদের কিছুই দেওয়া হয়নি। আমরা এখনও লড়াই করে যাচ্ছি। এখন যারা ক্ষমতায় রয়েছে তাদের কাছে পুরনোর কোনও মূল্য নেই। বিধায়ক-সাংসদরা সারা জীবন পেনশন পাবেন। ক্যান্টিন থেকে শুরু করে অন্যত্রও ভাতা পাবেন। কিন্তু আমজনতার কাছে কিছুই নেই। আমাদের বন্ধ করা ভাতা ফের চালু করা হোক।”
করোনা পূর্ববর্তী সময়ে ৬০ বছরের বেশি বয়সি পুরুষদের জন্য ৪০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হত টিকিটে। মহিলাদের ক্ষেত্রে তা ছিল ৫০ শতাংশ। কিন্তু বর্তমান সময়ে সেই ভাতা বন্ধ রয়েছে। অথচ পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়কালে ৬০ বছরের বেশি বয়সি ৪.৪৬ কোটি জন পুরুষ, ৫৮ বছরের বেশি বয়সি ২.৮৪ কোটি জন মহিলা ও ৮ হাজার ৩১০ রূপান্তরকামী ট্রেনে সফর করেছেন। কিন্তু কেউই কোনও ভাতা পাননি।