সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একদিকে চলছে ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে রক্তক্ষয়ী লড়াই। অন্যদিকে জারি রয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের সুযোগে রাশিয়াকে অস্ত্র পাঠাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। প্রায় হাজারের উপর সামরিক অস্ত্র বোঝাই কন্টেনার পিয়ংইয়ং থেকে গিয়েছে মস্কোতে। জানালো হোয়াইট হাউস।
এই বিষয়ে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি জানিয়েছেন, আমেরিকার (US) বিশ্বাস উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান কিম জং উন রাশিয়ার অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র তৈরির প্রযুক্তির নাগাল পেতে চাইছেন। তাই মস্কোকে সাহায্য করে উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনী ও পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদনকে শক্তিশালী করাই তাঁর উদ্দেশ্য। কিমের থেকে পাওয়া এই অস্ত্রগুলোই রাশিয়া যুদ্ধের ময়দানে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে। এবিষয়ে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে কয়েকটি ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, অস্ত্র বোঝাই কন্টেনারগুলো রাশিয়ার (Russia) জাহাজে তোলা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ইজরায়েলি বোমায় খতম হামাসের বায়ুসেনা প্রধান]
বিশ্লেষকদের মতে, হামাসের আচমকা ইজরায়েল আক্রমণে আমেরিকার সমীকরণ জট পাকিয়ে গিয়েছে। সময় থাকতে এই সংঘাতের আগুন না নেভালে তা গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়বে। এই লড়াইয়ের জেরে ইতিমধ্যে ইজরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা ঠান্ডাঘরে পাঠিয়ে দিয়েছে সৌদি আরব। ঘোলা জলে মাছ ধরতে আসরে নেমে পড়েছে ইরান। হামাসের হয়ে যে কোনও মুহূর্তে লড়াইয়ে নামতে পারে তেহরান। এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই ইউক্রেন থেকে নজর কিছুটা সরে যাবে। কিয়েভের জন্য আমেরিকা ও পশ্চিম থেকে আসা দেদার অস্ত্রের জোগানেও টান পড়বে। এই ডামাডোলে সুবর্ণ সুযোগ দেখছে রাশিয়া, চিন ও উত্তর কোরিয়া।
উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকার চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে রুশ সফরে গিয়েছিলেন কিম (Kim Jong Un)। বৈঠক করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের (Vladimir Putin) সঙ্গে। যুদ্ধের ময়দানে মস্কোকে নিঃশর্তভাবে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেন উত্তর কোরিয়ার সর্বাধিনায়ক। তখন থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধ আবহে দুই দেশের মধ্যে অস্ত্র চুক্তি হতে পারে। যা নিয়ে উত্তর কোরিয়াকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে ওয়াশিংটন। এর আগেও কিমের দেশের বিরুদ্ধে ক্রেমলিনকে অস্ত্র দেওয়ার অভিযোগ জানিয়েছিল বাইডেন প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, দেড় বছর পেরিয়ে গিয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের। পালটা আক্রমণ বা কাউন্টার অফেন্সিভে রণক্ষেত্রের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ‘লিলিপুট’ বাহিনী। আর পুতিনবাহিনীর বিরুদ্ধে কিয়েভকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করছে আমেরিকা। মার্কিন অস্ত্রবলেই এতটা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে ইউক্রেনের সেনা। যা এখন মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মস্কোর কাছে। ফলে উত্তর কোরিয়া, চিনের মতো দেশের সঙ্গে সামরিক ক্ষেত্রে সম্পর্ক মজবুত করছে রাশিয়া।