সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশে চরম খাদ্যসংকট শুরু হয়েছে। দ্রুত সমাধান তো দূর অস্ত, আগামী ৪ বছর ধরে এই সংকট চলবে বলে সতর্কবার্তা দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এই পরিস্থিতিতে অবশ্য সহজ সমাধানের পথ দেখিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন (Kim Jong Un)। দেশবাসীর প্রতি তাঁর নির্দেশ, ”আগামী ৪ বছর কম খান।” কিমের এই নিদান জানাজানি হতে শুরু হয়েছে ব্যাপক শোরগোল। তবে ‘একনায়ক’ কিমের তাতে ভ্রূক্ষেপ নেই। দেশবাসী কম খেলেই খাদ্যসংকটের মোকাবিলা করা যাবে বলে মনে করছেন তিনি।
বেশ কয়েক বছর ধরেই উত্তর কোরিয়ায় (North Korea) খাবারের দাম অনেকটা ঊর্ধ্বমুখী। পেট ভরাতে হিমশিম দশা দেশবাসীর। তবে এবার তা সবচেয়ে সংকটজনক অবস্থায় পৌঁছল। এর জন্য ‘series of deviations’কে দায়ী করেছেন কিম জং উন। যদিও বিশেষজ্ঞদের রিপোর্ট অনুযায়ী, একাধিক প্রাকৃতিক বিপর্যয়, কৃষিক্ষেত্রে সঠিক পরিকল্পনা ও পরিকাঠামোর অভাব-সহ একাধিক বিষয়কে দায়ী করা হয়েছে। কিন্তু সেসবকে আমল না দিয়ে উত্তর কোরিয়ার একনায়কের বক্তব্য, কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন চাহিদার তুলনায় অনেক কম। তাই খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় সকলের উচিত কম খাবার খাওয়া। প্রসঙ্গত, গত বছর করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) থাবায় মার খেয়েছিল সে দেশের উৎপাদন ক্ষেত্র। তারপর টাইফুনের ধাক্কায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়।
[আরও পড়ুন: উদ্বেগ কাটছে না দ্বিতীয় এলিজাবেথের স্বাস্থ্য নিয়ে, গ্লাসগো সম্মেলনেও থাকছেন না রানি]
দুর্গম এলাকায় খাবার পৌঁছে দেওয়ার সময় উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীই প্রশাসনকে রিপোর্ট পাঠিয়েছে। তাতেই বোঝা যায় যে দেশের খাদ্যসংকট (Food Crisis) কতটা চরমে। সংবাদসংস্থা রেডিও ফ্রি এশিয়ার রিপোর্ট বলছে, দু সপ্তাহ আগেই নাকি দেশে খাদ্যের জরুরি অবস্থা জারির ভাবনাচিন্তা চলছিল। বিশেষজ্ঞদের মত, চিন সীমান্ত খুলে দেওয়া হলে, আমদানি-রপ্তানি চালু করলে কিছুটা সুরাহা হতে পারে। কিন্তু ২০২৫ সালের আগে তা হওয়ার বিশেষ উপায় নেই। আর সেই কারণেই ২০২৫ সাল পর্যন্ত উত্তর কোরিয়ায় খাদ্যসংকট জারি থাকবে বলে আশঙ্কা।
[আরও পড়ুন: ‘প্রতিদিন বিপদ বাড়ছে’, লালফৌজের হামলার আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট]
আন্তর্জাতিক রিপোর্ট আরও বলছে, উত্তর কোরিয়ায় এই মুহূর্তে ৮ লক্ষ ৬০ হাজার টন খাবারের ঘাটতি আছে, যা সে দেশের প্রায় ২ মাসের মোট খাবারের পরিমাণ। দেশের ৪০ শতাংশ মানুষই অপুষ্টিতে ভুগছেন। এই অবস্থায় সদ্যই শাসকদল ওয়ার্কার্স পার্টির সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশন বৈঠক করে দেশের খাদ্য সংকট নিয়ে আলোচনা করে। তবে সমাধান কিছুই মেলেনি। তারপর কিম জং উনের এহেন নিদান নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে দেশের অন্দরমহলে।