সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একদিকে জারি রয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। অন্যদিকে গাজায় চলছে ভয়ংকর লড়াই। চুপ করে বসে নেই উত্তর কোরিয়াও। নিঃশব্দে একের পর এক শক্তিশালী যুদ্ধাস্ত্রের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন সেদেশের রাষ্ট্রপ্রধান কিম জং উন। তাঁর অস্ত্রভাণ্ডারে কোন কোন ‘ব্রহ্মাস্ত্র’রয়েছে তা নিয়ে কৌতূহলের অন্ত নেই বিভিন্ন দেশের। কিম সব সময়ই তাঁর হাতিয়ারের বাঙ্কার নিয়ে চূড়ান্ত গোপনীয়তা বজায় রাখতেন। তাঁর এই কঠোর নিয়মের বেড়াজাল ভাঙার চেষ্টা করলে নেমে আসত মৃত্যুর খাঁড়া। কিন্তু এবার প্রকাশ্যে কিমের সেই পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার!
দক্ষিণ কোরিয়া, আমেরিকা আর জাপানের জোট মাথাব্যথার অন্যতম কারণ কিমের। রাশিয়ার সঙ্গে গভীর বন্ধুত্ব নিয়েও ওয়াশিংটনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছেন তিনি। 'শত্রু'দের নজরে রেখে মাঝেমধ্যেই তিনি সাগরে পরীক্ষার নামে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়েন। উত্তর কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ-র এক রিপোর্টে কিম রাজার অস্ত্রভাণ্ডারের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। জানা গিয়েছে শুক্রবার সমরাস্ত্র তৈরির কারখানা পরিদর্শনে যান কিম। ছবিতে দেখা গিয়েছে সেখানে সাজানো রয়েছে নানা অস্ত্রশস্ত্র। সেনা আধিকারিকদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সারছেন কিম। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছেন সমস্ত কিছু। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দাবি, উত্তর কোরিয়ার কাছে ৫০টির কাছাকাছি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। শুধু তাই নয়, শতাধিক পরমাণু অস্ত্র বানানোর জন্য রসদও রয়েছে তাদের হাতে। পরমাণু হাতিয়ারের পাশাপাশি ডুবোজাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিয়েও কাজ করছে কিমের দেশ।
[আরও পড়ুন: মাত্র ৩৬ বছরে হৃদরোগে আক্রান্ত! অকালমৃত্যু বিশ্বসেরা বডি বিল্ডারের]
মাস দুয়েক আগেই অতিবৃহৎ আণবিক বোমা বহনে সক্ষম মিসাইলের পরীক্ষা করেছে পিয়ংইয়ং। যা সফলও হয়েছে। ওই একেকটি বোমার ওজন প্রায় ৪.৫ টন। যা বহুদূর পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম। সমর বিশ্লেষকদের মতে, আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়াকে চোখ রাঙিয়ে এই হাতিয়ার তৈরি করেছেন কিম। গত বছরের ডিসেম্বরে শত্রু দেশে পরমাণু হামলার হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর সাফ বার্তা ছিল, প্রতিপক্ষ যদি পরমাণু অস্ত্রের আস্ফালন করে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে তাহলে আক্রমণ শানাতে পিছপা হবে না উত্তর কোরিয়া।
উল্লেখ্য, প্রতিপক্ষকে যোগ্য জবাব দিতে নিজেদের অস্ত্রাগার সম্প্রসারণও করছে উত্তর কোরিয়া। উন্নত যুদ্ধাস্ত্রের পরীক্ষা চলছে। এর মাঝেই কিমের দেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে জাপান, আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়া। এই ত্রিপাক্ষিক মহড়ার জন্য সাগরে একটি মার্কিন বিমানবাহী রণতরী মোতায়েন করা হয়েছিল। যার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল পিয়ংইয়ংয়ের তরফে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, উত্তর কোরিয়া সব সময়ই চূড়ান্ত গোপনীয়তায় মোড়া। কিমের নজর এড়িয়ে মাছি গলার উপায় নেই সেদেশে। সেখানে অস্ত্রভাণ্ডারের ছবি প্রকাশ্যে আসা কিমের কোনও চাল হতে পারে। যাতে তিনি পশ্চিমা বিশ্বের কাছে নিজের শক্তি প্রদর্শন করতে পারেন।