সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংকটে উত্তর কোরিয়া (North Korea)। এবছর ৮ লক্ষ ৬০ হাজার টন খাদ্যের অভাব রয়েছে সেদেশে। যার ফলে দেখা দিতে চলেছে প্রবল খাদ্যাভাব। এমনটাই সতর্কবার্তা দিয়েছিল রাষ্ট্রসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা। কিন্তু তাতেও হুঁশ ফেরেনি দেশটির একনায়ক কিম জং উনের। বরং, ফের ব্যালিস্টিক মিসাইলের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করল তাঁর ফৌজ।
[আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন নিয়েও করোনায় মৃত আমেরিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ বিদেশ সচিব কলিন পাওয়েল]
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস সূত্রে খবর, কিমের ফৌজের মিসাইল ছোঁড়ার কথা জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী ও জাপান। দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাসর্বাধিনায়ক জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় মতে সোমবার সকাল ১০টা ১৭ মিনিট নাগাদ সিনপো অঞ্চলে মিসাইল উৎক্ষেপণ করেছে কিমের সেনা। ওই অঞ্চলেই নিজেদের সাবমেরিন ও ক্ষেপণাস্ত্রের ভাণ্ডার মজুত রেখেছে দেশটি। এই বিষয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা জানিয়েছেন, জাপানের সেনা দু’টি মিসাইল উৎক্ষেপণ হয়ছে বলে জানতে পেরেছে। এই বিষয়ে তিনি বলেন, “এহেন ঘটনা খুবই পরিতাপের বিষয়।”
বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ কোরিয়া ও আমেরিকার উপর চাপ তৈরি করতেই পরপর মিসাইল উৎক্ষেপণ করছে কিমের ফৌজ। উত্তর কোরিয়ার আণবিক অস্ত্র প্রকল্প নিয়ে বর্তমানে থমকে যাওয়া আলোচনা ফের চালু করতে চাইছেন একনায়ক কিম। এবং আমেরিকার সঙ্গে আলোচনার টেবিলে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থান হাসিল করতেই ফের মিসাইল উৎক্ষেপণ করে শক্তিপ্রদর্শন করছেন তিনি।
এদিকে, গত জুনেই উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন দেশের খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে। জানিয়েছিলেন, দেশের অর্থনীতির খানিকটা উন্নতি হলেও খাদ্য পরিস্থিতি ক্রমশই ভয়াবহ উঠছে। এমন পরিস্থিতিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আহ্বান জানাতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এহেন সময়ে মিসাইল উৎক্ষেপণের নামে লক্ষ লক্ষ ডলার খরচ করে দেশকে আরও বিপাকে ফেলছেন কিম বলেই মনে করছেন সমালোচকরা।
এমনিতেই উত্তর কোরিয়ার মুখ থুবড়ে পড়া অর্থনীতি ও খাদ্যসংকট বহুদিন ধরেই ভোগাচ্ছে সাধারণ মানুষকে। গত বছর অতিমারীর ধাক্কায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। দেশের সীমান্ত বন্ধের নির্দেশ দেন কিম। ফলে চিনের সঙ্গে বাণিজ্য কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। তারপরই ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার প্রকোপে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠতে থাকে। গত মাসেই দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের এক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক দাবি করেছিল, এবছর ১০ লক্ষ টন খাবারের অভাব দেখা দিতে পারে দেশে। সেই আশঙ্কা সত্যি হয়েছে অবশেষে।