সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাঁড়ির হাল দেশের কোষাগারের। পরিস্থিতি এমন জায়গায় গিয়েছে যে সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ার শাসকদল ওয়ার্কার্স পার্টির একটি অনুষ্ঠানে নিজের ব্যর্থতার কথা স্বীকারও করেছেন দেশটির স্বৈরাচারী শাসক কিম জং উন। হাজার হাজার দলীয় প্রতিনিধির সামনে বলেছেন, গত পাঁচ বছর ধরে তিনি উত্তর কোরিয়ার আর্থিক উন্নতির জন্য যা যা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তা সবই ব্যর্থ হয়েছে। পাশাপাশি করোনা মহামারীর কারণেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের অর্থনীতি। তাঁর এই মন্তব্যকে বিরল ঘটনা বলে উল্লেখ করে সবাই যখন জল্পনায়ও মত্ত তখন চিরাচরিত ভাবে নিজের আসল স্বরূপে দেখা গেল উত্তর কোরিয়া (North Korea)’র প্রধানকে। অর্থনীতি বেহাল হলেও দলীয় প্রতিনিধিদের সামনে দেশের সামরিক শক্তি আরও বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করলেন কিম জং উন। ইতিমধ্যেই সেনা আধিকারিকদের এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি নির্দেশ দিয়েছেন বলেও খবর।
[আরও পড়ুন: ক্ষমতা হারানোর আগেই ‘অসহায়’ ট্রাম্প, পদত্যাগের হিড়িক প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের]
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে কিম জং উন (Kim Jong-un) -এর এই পদক্ষেপের কথা প্রকাশ পাওয়ার পরেই বিশ্বের রাজনীতিতে ফের নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি দিকে কড়া নজর রাখছে আমেরিকা-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। বিগত কয়েক বছরের মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের থাকার সময়ই আমেরিকা ও উত্তর কোরিয়া সবথেকে কাছাকাছি এসেছিল। বাগযুদ্ধের পাশাপাশি দু’পক্ষের ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর চেষ্টা কাছাকাছি নিয়ে এসেছিল কিম জং উন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। যদিও তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। প্রথম বৈঠকে আশার আলো দেখা গেলেও ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার হানোইতে হওয়া আলোচনা ভেস্তে যায়। এরপর থেকে কেউ সমঝোতার রাস্তায় না হাঁটলেন কিম বা ট্রাম্প একে অপরের বিরুদ্ধে কোনও বিষোদগার করেননি।
কিন্তু, এখন জো বিডেন (Joe Biden) মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে বসতে চলায় পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের কথায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে একটি বির্তক সভায় কিমকে ‘গুন্ডা’ বলে উল্লেখ করেছিলেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বিডেন। এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে পালটা বিডেনকে ‘পাগলা কুকুর’ বলেছিল পিয়ংইয়ং। এখনই সেই জো বিডেন আমেরিকার মসদনে আসীন হওয়া চিন্তায় পড়েছেন উত্তর কোরিয়ার স্বৈরাচারী শাসক। আর তাই সামরিক শক্তি বাড়ানোর কথা বলে হোয়াইট হাউসের উপর মানসিক চাপ তৈরির চেষ্টা করছে। বোঝাতে চাইছে প্রয়োজন হলে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রয়েছে তারা। তবে পরমাণু শক্তি বাড়ানোর বিষয়ে কিছু না বলে শুধু সামরিক ক্ষমতা বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করায় অনেকে বলছেন কিছুটা হলেও বিডেনকে ভয় পাচ্ছেন কিম।