ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: আর অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal)নয়, বোলপুর লোকসভার অন্তর্গত পূর্ব বর্ধমানের (East Burdwan) আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রাম বিধানসভা এবার থেকে দেখবে জেলা নেতৃত্বই। বৃহস্পতিবার ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে বৈঠকে ডেকে পূর্ব বর্ধমান সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বকে এই নির্দেশ দিয়েছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। বৈঠকে অভিষেকের সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিও। নেতৃত্বের মিলিত সিদ্ধান্ত জানিয়ে একইসঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন প্রসঙ্গে জেলা নেতৃত্বের প্রতি স্পষ্ট নির্দেশ, মানুষের ভোট মানুষ দেবে। বিরোধীদের মনোনয়নে কোনওরকম বাধা নয়। একইসঙ্গে দলে সমন্বয় নিয়েও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বার্তা দিয়েছেন বলে খবর। বলা হয়েছে, দল বড় হয়েছে। দলকে অস্বস্তিতে ফেলে এমন কিছু যেন কেউ না করে। সূত্রের খবর, এবার আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের সাংগঠনিক কাজকর্ম দেখবেন পূর্ব বর্ধমানের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়।
[আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য: হাই কোর্টে ধাক্কা, রোদ্দুর রায়ের আবেদন খারিজ বিচারপতির]
দীর্ঘ বৈঠকে এদিন মূলত সাংগঠনিক এলাকা ধরে ধরে কথা বলেন সুব্রত বক্সি এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিটি বিধানসভা এবং সাংগঠনিক এলাকা ধরে পর্যালোচনার পর জানিয়ে দেওয়া হয়, বোলপুর লোকসভার সাংগঠনিক দায়িত্ব এবার থেকে সামলাবেন এই সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বই। এই দায়িত্ব এতদিন সামলেছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তিনি এখন জেল হেফাজতে। স্বাভাবিকভাবেই এই অবস্থায় নতুন করে দায়িত্ব বণ্টনের প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে দল যেখানে সাংগঠনিক জেলা ইতিমধ্যে ভাগ করেই দিয়েছে, সেখানে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে একটি এলাকার দায়িত্ব অন্য এলাকার নেতৃত্বের হাতে রাখতে চাইছে না তৃণমূল। অর্থাৎ, জেলাস্তরে সাংগঠনিক দিক থেকে দল পরিচালনার বিষয়টি একেবারে পদ্ধিতগতভাবে ত্রুটিহীন রাখতে চাইছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
একইসঙ্গে জেলা নেতৃত্বকে অভিষেকের বার্তা, দল বড় হয়েছে। সকলকে নিয়ে সমন্বয় রেখে একসঙ্গে চলতে হবে। দলকে অস্বস্তিতে ফেলে এমন কোনও কাজ করবেন না। কোথাও কোনও সমস্যা হলে তাঁকে জানানোর কথা বলেছেন অভিষেক। আশ্বাস দিয়েছেন, প্রয়োজনমতো তিনিই বোঝাপড়া করবেন। এর সঙ্গেই গ্রাম পঞ্চায়েত পরিচালনার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা রাখার কথা বারবার মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২০২৪-এ লোকসভার কঠিন লড়াই। সে কথা মাথায় রেখে সাংগঠনিক দিক থেকে দলকে এখন থেকে তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক।
[আরও পড়ুন: ফের পিছোল কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচন, রাহুলকে রাজি করাতে মরিয়া দল!]
বিরোধীরা আগের নির্বাচনগুলির ক্ষেত্রে মনোনয়নে বাধা নিয়ে একের পর এক অভিযোগ তুলেছিল। মনোনয়নে বাধা থেকে প্রার্থীর মনোনয়ন তুলতে বাধ্য করার অভিযোগও সামনে এসেছে। এদিনের বৈঠকে শীর্ষ নেতৃত্ব সে বিষয় মাথায় রেখে স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, এমন অভিযোগ যেন আর কখনও না ওঠে। মানুষকে তার নিজের ভোট নিজেকে দিতে হবে। সেক্ষেত্রে সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়ার কথা বলেছেন অভিষেক। সেই প্রেক্ষিতেই প্রতিটি স্তরে সমন্বয় রেখে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য জেলাগুলির ক্ষেত্রে যেভাবে জেলাস্তরে ব্লক কমিটি তৈরি নিয়ে স্থানীয় নেতৃত্ব ও বিধায়কদের মতামত চাইছেন অভিষেক, এদিনও তার কোনও ব্যতিক্রম হয়নি। দ্রুত তা নিয়ে দল সিদ্ধান্ত নিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।