সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়ে রাশিয়ার উপর একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে আমেরিকা। রুশ অশোধিত তেল কেনার বিরুদ্ধে ফরমান জারি করেছে তারা। আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থা ‘সুইফট’ থেকেও মস্কোকে ছেঁটে ফেলেছে ওয়াশিংটন। কিন্তু এতকিছুর পরও রাশিয়াকে ‘একঘরে’ করতে ব্যর্থ হয়েছে আমেরিকা। কারণ, দেশটির পাশে দাঁড়িয়েছে এশিয়ার দুই মহাশক্তি ভারত ও চিন। আর একপ্রকার বাধ্য হয়েই এবার সেই সম্পর্ক কার্যত মেনে নিয়েছে আমেরিকা।
বুধবার রুশ-ভারত ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ সম্পর্ক নিয়ে মুখ খোলেন মার্কিন বিদেশ দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস। রাশিয়া (Russia) থেকে ভারতের তেল আমদানি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে খানিকটা হতাশ সুরেই তিনি বলেন, “ইউক্রেন ইস্যুতে অনেক দেশই রাষ্ট্রসংঘে ভোট দিয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। রুশ আগ্রাসনের নিন্দায় সরব হয়েছে তারা। কিন্তু বিষয়টা জটিল। এত আর সুইচ টিপে আলো জ্বালানোর মতো সহজ বিষয় নয়। অনেক দেশেরই রাশিয়ার সঙ্গে বহুদিনের সম্পর্ক রয়েছে। যেমন রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক বহু বছরের। তাই বিদেশনীতির অভিমুখ বদলে নিতে তাদের কিছুটা সময় লাগবে।” তিনি ইঙ্গিতে আরও জানান যে এই মুহূর্তে কৌশলগত সহযোগী হিসেবে কিছুতেই নয়াদিল্লিকে চটাতে চায় না ওয়াশিংটন।
[আরও পড়ুন: কাবুলের মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, জেহাদি হামলায় মৃত অন্তত ২০]
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, মঙ্গলবার ব্যাংককে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর স্পষ্ট জানান, রাশিয়া থেকে অশোধিত তেল কেনা চলবে। কারণ, চলতি বাজার দরের তুলনায় ‘খুব ভাল অফার’ দিয়েছে মস্কো। ইঙ্গিতে জয়শংকর স্পষ্ট করে দেন যে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কোনওমতেই মানবে না ভারত। বিশ্লেষকদের মতে, এশিয়ায় চিনকে রুখতে কৌশলগত সহযোগী হিসেবে আমেরিকার কাছে ভারতের অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই ইউক্রেন (Ukraine) ইস্যুতে নয়াদিল্লির উপর চাপ বাড়াতে চাইছে না ওয়াশিংটন।
উল্লেখ্য, এই প্রথম বার নয়, এর আগেও বহুবার রুশ তেল আমদানি করা প্রসঙ্গে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন জয়শংকর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২+২ বৈঠকেও তিনি বলেছিলেন, ভারত একমাসে যে পরিমাণ রুশ তেল কেনে, ইউরোপের দেশগুলি এক সন্ধ্যায় তার থেকে বেশি পরিমাণ তেল কেনে। রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখার কারণে বেশ কয়েকবার ভারতের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দিয়েছে আমেরিকা। কিন্তু বরাবরই নিজেদের অবস্থানে অটল থেকেছে ভারত।