সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেন যুদ্ধের (Ukraine war) জেরে তুঙ্গে ভারত-আমেরিকা কূটনৈতিক টানাপোড়েন। ফের রুশ অপরিশোধিত তেল আমদানি নিয়ে নয়াদিল্লিকে ইঙ্গিতে হুমকি দিল ওয়াশিংটন। ফলে বিশ্লেষক মহলের প্রশ্ন, লাগাতার বাড়তে থাকা আন্তর্জাতিক চাপের মুখে কি অবস্থান বদল করবে মোদি সরকার?
[আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় বেনজির অর্থনৈতিক সংকট, ইস্তফা দিল গোটা মন্ত্রিসভা, কোণঠাসা ‘চিনপন্থী’ রাজাপক্ষে]
সোমবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেন ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করলে তা ভারতের ‘স্বার্থে আঘাত হানবে’। এদিন ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “জ্বালানি সংক্রান্ত লেনদেনে কোনও আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। এটা প্রত্যেকটি দেশের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। আমরা এবং আরও কয়েকটি দেশ জ্বালানি (রাশিয়া থেকে) আমদানি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি মনে করি না রাশিয়া থেকে তেল ও অন্য পণ্য আমদানি করা ভারতের স্বার্থের পক্ষে।”
বলে রাখা ভাল, ইউক্রেনে যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার উপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলি। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে লাগাতার বাড়ছে অপরিশোধিত তেলের দাম। আর রাজকোষে বিশাল চাপ সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে মোদি সরকার। এহেন পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লিকে সস্তায় তেল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মস্কো। কেন্দ্র সরকারও রুশ তেল অমদানিতে সবুজ সংকেত দিয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। পাশাপাশি, নয়াদিল্লি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে ইউরোপের দেশগুলি রাশিয়া থেকে তেল কিনছে, তা হলে সেই বিষয়ে ভারতকে নিশানা করার নৈতিক অধিকার কারও নেই। অর্থাৎ, ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে জ্বালানির চাহিদা মেটাতে রুশ তেল আমদানি চলবে।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, সম্প্রতি ভারতে এসে ডেপুটি মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা দলীপ সিং স্পষ্ট জানিয়ে দেন, রাশিয়ার (Russia) বিরোধিতা না করে ভুল করছে ভারত (India)। বিপদে পড়লে ভারতকে বাঁচাতে আসবে না রাশিয়া, এই হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে আমেরিকার তরফ থেকে। সেই প্রসঙ্গে জেন সাকির বক্তব্য, “সফরে দলীপ সিং ভারতের প্রতিনিধির কাছে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে রুশ পণ্য আমদানি করা তাদের স্বার্থের পরিপন্থী।”
প্রসঙ্গত, রুশ মুদ্রা রুবল এবং ভারতীয় মুদ্রার মাধ্যমে বাণিজ্যিক আদান প্রদান সম্ভব কিনা, তা নিয়ে আলোচনার জন্য গত সপ্তাহে ভারতে আসেন রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তারমধ্যেই কেন্দ্র সরকারকে কড়া বার্তা দেয় বাইডেন প্রশাসন। ফলে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে ভারত। যদিও ভারতীয় বিদেশসচিব জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত রাশিয়া এবং ভারতের যা যা বাণিজ্যিক চুক্তি রয়েছে, তা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই।