সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়: শেয়ার বাজারে এখন চলছে নতুন নতুন উচ্ছ্বাস। এরকম একটা বাজারে লগ্নির অনেক রকম সুযোগ এসে যায়। বিভিন্ন শেয়ারে বিভিন্ন কারণে লগ্নি করা যায়। সম্প্রতি বিদেশি লগ্নিকারীরা কিছু শেয়ারে লগ্নি করেছে। আশ্চর্যই লাগছে এটা দেখে যে দামগুলো মোটেই সস্তা নয়। কিন্তু এই দামেও ওদের লগ্নি সাহস জোগাচ্ছে যে আমরাও লগ্নি করতে পারি।
[আরও পড়ুন: কংগ্রেস যোগ দেওয়ার কথা অস্বীকার করলেন স্বপ্না চৌধুরি]
প্রথমেই বলা যায়, কলকাতার কোম্পানি বাটার কথা। বর্তমান দাম ১৩৬০ টাকা। এক বছর আগেও দাম ছিল ৭০০ টাকা। তার মানে এক বছরে বেড়েছে ৬০০ টাকা। কী হল এই জুতোর কোম্পানিতে? তলে তলে অনেক কিছু হচ্ছিল যা বেশিরভাগ লগ্নিকারী বুঝতে পারেননি। প্রথমত আধুনিক ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন ডিজাইনের জুতো। নতুন নতুন দোকান ইত্যাদি। এরা নিজেরা আর জুতো বানায় না। সেটাই সবচেয়ে বড় কথা। অন্যকে দিয়ে সস্তায় তৈরি করিয়ে নেয়। দামি জুতোগুলো অবশ্য নিজেরাই বানায়। জুতোটা ওরা বোঝে।
একটা মজার গল্প বলি– এক ডাক্তার বন্ধু বলেছিলেন আমরা যা যা পরি, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি খরচ করা উচিত জুতো, চশমা আর অন্তর্বাসে। তিনি এটি বলেন পাঁচ বছর আগে। সাংঘাতিক শেয়ার টিপস। কিন্তু বুঝেও বুঝে উঠতে পারিনি। পাঁচ বছর আগে বাটার শেয়ারের দাম ছিল ৫০০ টাকা। এখন ১৩৬০ টাকা। পাঁচ বছর আগে অন্তর্বাস প্রস্তুতকারক কোম্পানি লাক্স-এর দাম ছিল ৫৫০, যা এখন ১৩০০ টাকা। চশমার কোম্পানি টাইটান– অবশ্য তখন চশমার কোম্পানি হিসেবে এদের অতটা পরিচিতি ছিল না– কিন্তু তার শেয়ারের দাম ছিল ৩৫০ যার দাম এখন ১১০০। এ সবে লগ্নি করে বসে থাকলে টাকা খায় কে!
বিদেশি লগ্নিকারীরা এই মুহূর্তে বাটাতে টাকা লাগিয়েছে। কী ভাবছে তা জানি না। তবে দাম যে বৃদ্ধি পাবে, বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না। কতটা বৃদ্ধি পাবে? তা তো জানি না। হয়তো পাঁচ বছর পরে জানা যাবে। তা হলে কি বাটা ১৩৬০ টাকায় কেনা যাবে? প্রথম প্রশ্ন, আপনার হাতে পাঁচ বছর সময় আছে কি? দ্বিতীয় প্রশ্ন, যদি আপনি এখানে কেনেন, তা হলে দাম পড়লে আবার কখন কেনা যায়? প্রথম প্রশ্নের উত্তর আপনি নিজে দেবেন। দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর, এখানে কিনলে দাম হয়তো ১১০০ টাকায় পেতে পারেন। মানসিকভাবে তৈরি থাকতে হবে, যদি ওই দামে আসে, কিনতে হবে। এই দিকটা আগে বুঝে নিয়ে কেনার কথা ভাবতে হবে। কারণ, টাকা আপনার, সিদ্ধান্তও আপনার।
বিদেশি লগ্নিকারীরা হাল আমলে আরেকটি শেয়ারে নজর দিয়েছে। শেয়ারটি হল আরবিএল ব্যাংক। যার বর্তমান দাম ৬৫০ টাকা। ২০১৭-তে দাম ছিল ৪০০-৫০০ টাকা। সেই হিসেবে বিশেষ দাম চড়েনি। ব্যাংকও সবে শুরু করেছে ব্যবসা। এখনও সেই অর্থে আমরা আরবিএল ব্যাংকে নজর দিচ্ছি না। আসলে এদের শাখা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায়। আরবিএল ব্যাংক কেন ভাল? এই ব্যাংক রিটেল ব্যবসায় ভাল করছে। আগামিদিনে ব্যবসাটাও বড় হবে আশা করা যায়। সেই আশাতেই বিদেশি লগ্নিকারীরা এরকম দামেও কিনছে। ২০১৯-এর ফেব্রুয়ারিতে দাম ছিল ৫৫০ টাকা। এখন দাম ৬৫০ টাকা। এখানে কিনলেও দাম আবার হয়তো আসবে ৫৫০ টাকায়। আসুক। তখনও নিশ্চয়ই কিনবেন। এই ব্যাংকের ননপারফর্মিং অ্যাসেট কম। সেটা যে কোনও ব্যাংকের জন্যই ভাল। যেমন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলির এনপিএ বেশি থাকায় দাম খারাপ ছিল। এখন পরিবর্তনের পালা। সেই জন্য সেখানেও লগ্নি হতে পারে। যদিও বিদেশি লগ্নিকারীদের বিনিয়োগ বেসরকারি ব্যাংকেই। সেই জন্য আমরাও সেখানেই লগ্নি করব। আপাতত এই দু’টি শেয়ার। এ ছাড়াও আরও অনেক গল্প তৈরি আছে। সেগুলো ক্রমশ প্রকাশ্য।
[মায়াবতীর উলটো পথে হেঁটে ভোটের ময়দানে অখিলেশ, লড়বেন বাবার কেন্দ্রে]
The post এসেছে সুযোগ, জুতো-চশমায় নজর দিলে ফল মিলবে শেয়ার বাজারে appeared first on Sangbad Pratidin.