স্টাফ রিপোর্টার: এবার গাড়ি সংক্রান্ত সব তথ্য রাখা যাবে ডিজি লকারেই। আধার কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পলিউশন সার্টিফিকেট থেকে শুরু করে যাবতীয় তথ্য রাখতে পারবেন এই মোবাইল অ্যাপটিতেই। সেক্ষেত্রে চালককে সবসময় গাড়ির কাগজপত্র বহন করতে হবে না। ট্রাফিক আইন ভাঙার ক্ষেত্রে জরিমানা বৃদ্ধি নিয়ে মানুষের মধ্যে একটা অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। তারমধ্যেই বৃহস্পতিবার কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের তরফে পরিবহন দপ্তরের এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি ফের স্মরণ করিয়ে নিজেদের ফেসবুক পেজে আপলোড করা হয়। এমনকি কোনও কেস হলেও ই-চালানের মাধ্যমেই আপনার কাছে এই ডিজি লকারে চলে আসবে সব তথ্য। যে কোনও সময়, যে কোনও স্থানে গ্রাহকরা নিজেদের ডিজিটাল নথিগুলি অ্যাক্সেস করতে পারবেন। তবে, এই ডিজি লকার ব্যবহার করার জন্য আধার নম্বর বাধ্যতামূলক।
এদিকে ট্রাফিক আইন ভাঙলে সামান্য জরিমানা দিয়ে আর পার পাওয়া যাবে না। গুনতে হবে মোটা টাকা। আর তাই এই জরিমানা এড়াতেই এবার রাস্তায় গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও সতর্ক হবেন চালকরা। কমবে দুই গাড়ির রেষারেষি, ওভার স্পিডে গাড়ি চালানোর প্রবণতা। সিগন্যাল না মানার মতো অপরাধ। আর তাতেই কমতে পারে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা। অন্তত তেমনটাই মত পরিবহন বিশেষজ্ঞদের। ইতিমধ্যেই নতুন হারে জরিমানা নেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে শহরে ট্রাফিক গার্ডে। ফলে চালকদেরও দেখা যাচ্ছে নিয়ম মেনেই গাড়ি চালাতে।
[আরও পড়ুন: রাজ্যপালের অপসারণের দাবিতে সংসদে প্রস্তাব আনার ভাবনা তৃণমূলের, তৈরি হচ্ছে নীল নকশা]
এসবের পাশাপাশি ট্রাফিক আইন ভঙ্গে জরিমানা বৃদ্ধির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার পথে নামেন বাস-ট্যাক্সি, অ্যাপ ক্যাব চালকরা একদল রাসবিহারী মোড়ে বিক্ষোভ দেখায়, আরেকদল মিছিল করে শিয়ালদহে। তারপর পরিবহন সচিবের কাছে ডেপুটেশন জমা দেন তারা। প্রত্যেকেরই বক্তব্য, এমনিতেই রাস্তায় মানুষ কমে গিয়েছে। যে কারণে বাস, ট্যাক্সি বা ক্যাব চালিয়ে তেমন আয়ই হচ্ছে না। এরপর যদি এত টাকা জরিমানার অঙ্ক থাকে, তাহলে তো মালিকরা গাড়িই নামাবেন না। জরিমানার নয়া অংক বেকায়দায় সাধারণ মানুষও। পলিউশন সার্টিফিকেট না থাকলে জরিমানা ১০ হাজার টাকা, ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলে পাঁচ হাজার টাকা, হেলমেট না পড়লে হাজার টাকা জরিমানা। সাধারণ মানুষের বক্তব্য, অনেক সময়ই গাড়ির কাগজপত্র সবকিছু ঠিকঠাক থাকে না। তার জন্য যদি এতটাকা জরিমানা দিতে হয়, তাহলে তো পুলিশ গাড়ি ধরলে তা জমা রেখে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরতে হবে।
বিশিষ্ট পরিবহন বিশেষজ্ঞ আইআইটি খড়গপুরের প্রফেসর ভার্গব মৈত্র বলেন, “শাস্তি যদি কঠোর না হয় সে ক্ষেত্রে অপরাধ করার আগে অপরাধী ভাবে না। কিন্তু এবার জরিমানা যে পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে তাতে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাতে অথবা নিয়ম না মেনে গাড়ি চালানোর আগে চালককে অনেকবার ভাবতে হবে। আশা করা যাচ্ছে জরিমানার অংক বাড়ায় দুর্ঘটনা অনেকটাই কমবে।” অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ”জরিমানার অংক যদি না কমে সেক্ষেত্রে রাস্তায় বাস, ক্যাব অনেক বসে যাবে। মালিকরা এই ব্যবসা থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেবেন।”