সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেওয়ালে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান লেখার ‘অপরাধে’ বাংলাদেশে প্রাণ
গেল দুই তরুণের। দেশের উত্তরপ্রান্তের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ঘটনাটি ঘটেছে। নিহতদের একজন মহম্মদ মাসুদ রানা, অপরজন মহম্মদ রায়হান। বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালে ছাত্র লিগের নেতা হিসাবে পরিচিত দুই তরুণ দেওয়ালে জয় বাংলা স্লোগান লিখেছিলেন। এই অপরাধে একদল লোক তাঁদের উপর চড়াও হয়। প্রকাশ্যে সকলের সামনে তাঁদের কুপিয়ে হত্যা করা হয়। বাধা দিতে গেলে আহত হন চারজন।
হুমকি-খুন সব এত কিছুর পরও মুখে কুলুপ এঁটেই রয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। সঙ্গে চলছে সত্যি লুকানোর চেষ্টাও। যেমন মঙ্গলবারের খুনের ঘটনাকে নিছক পারিবারিক হিংসা বলে চালানোর চেষ্টা করেছে পুলিশ-প্রশাসন। যদিও আওয়ামি লিগের দাবি, মাসুদ ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পলিটেকনিকের ছাত্র লিগের সভাপতি এবং সংগঠনের নাচোল উপজেলার সহ-সম্পাদক। অন্যদিকে, রায়হান নাচোল উপজেলার নেতা। আওয়ামি লিগের অভিযোগ, জামায়াত ইসলামির ছাত্র শাখা ছাত্র শিবির ও বিএনপি কর্মীরা এই খুনের সঙ্গে জড়িত।
পাশাপাশি, বুধবারও সমানতালে জারি রইল ভারত বিরোধী উসকানি। এবার বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্তার গলায় ভারতে পরমাণু বোমা হামলার হুমকি। বিজয় দিবসের সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে ভারতকে নিশানা করেন অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্তা অলি আহমেদ। বললেন, “যে ভারত ১৫ বছর বাংলাদেশকে গাভী হিসেবে ব্যবহার করেছে, সেই ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন হাসিনা। আমাদেরও অনেক বন্ধুরাষ্ট্র আছে, যাদের কাছে নিউক্লিয়ার বোমা আছে এবং তারা দিতে রাজি আছে। সুতরাং ভারত যদি ব্যবহার করে, আমরা এখানে কলা চুষব, এটা হবে না। এখান থেকেও নিউক্লিয়ার বোমা ছোড়া হবে।”
শুধু প্রাক্তন সেনাকর্তা নন, বাংলাদেশের ছাত্রনেতার গলাতেও অনুরূপ ভারত বিদ্বেষ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিশানা করতে দেখা গিয়েছে বাংলাদেশের এক ছাত্রনেতাকেও। টেলিভিশন চ্যানেল ‘এখন টিভি’-তে এক ভাষণে জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ উগ্র সাম্প্রদায়িক মোদি-বিরোধী। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রশ্নের মুখে পড়লে কাউকে ছেড়ে কথা বলা হবে না।”
কিছুদিন আগে বিএনপি নেতা রুহুল কবীর রিজভির পর এ দিন ফের ভারত বিরোধী উসকানি ঘিরে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা। প্রশ্ন উঠছে, বারবার কার ভরসা ও উসকানিতে এমন ঘটনা চলছে। কিছুদিন আগেই এক পাকিস্তানি কট্টরপন্থী নেতার গলায় শোনা গিয়েছিল, পারমাণবিক শক্তি নিয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকার বার্তা। ইউনূস সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই বাংলাদেশে একটু একটু বেড়েছে পাকিস্তানের তৎপরতা। পাকিস্তানিদের ভিসা দেওয়ার নিয়ম শিথিল করা, জিন্নাকে বাংলাদেশের জনক ঘোষণার দাবি তোলা থেকে শুরু করে ১৯৭১-এর পর এই প্রথম চট্টগ্রাম বন্দরে এসে নোঙর করেছে পাকিস্তানি জাহাজ।
সন্দেহ নেই, উসকানির মদতদাতার ‘অদৃশ্য ছায়া’ প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। প্রসঙ্গত, প্রতিবেশী দেশের এই বর্তমান পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতে নয়াদিল্লি।