অভিষেক চৌধুরী, কালনা: চিকিৎসা পরিষেবা শিকেয় তুলে হাসপাতালের মধ্যে তারস্বরে বক্স বাজিয়ে কর্তব্যরত নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্দাম নৃত্যের অভিযোগ! সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নাম করে মন্তেশ্বর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এমনই এক ভিডিও ছবি ভাইরাল হতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। দু’ঘন্টারও বেশি সময় ধরে এই অনুষ্ঠান হয় এবং তার জেরে চিকিৎসা পরিষেবাতেও বিঘ্ন ঘটেছে বলে সবমহলে সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় ওঠে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি মানতে নারাজ।
মন্তেশ্বর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিদিনই বহু মানুষজন চিকিৎসা নিতে আসেন। ইনডোর আউটডোর মিলিয়ে কয়েকশো রোগীর ভিড়ও দেখা যায়। শুক্রবার হাসপাতাল চত্বরে রোগীদের আসা যাওয়ার মাঝেই কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, আশাকর্মী-সহ অন্যান্যদের ওই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মেতে থাকতেও দেখা গিয়েছে বলে দাবি অনেকের। হাসপাতালের এক সভাগৃহে ব্লক প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ও আশাকর্মীদের বাৎসরিক ওই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে থাকার কথা স্বীকারও করে নেওয়া হয়েছে বলে খবর। ভাইরাল হওয়া ভিডিওয় তারস্বরে বক্স বাজিয়ে চটুল হিন্দি গানের তালে কোমর দুলিয়ে নাচতেও দেখা গিয়েছে কর্তব্যরত নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী-সহ অন্যান্যদের। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের উপস্থিতিও চোখে পড়েছে।
[আরও পড়ুন: জেলায় বিজেপিকে হারিয়ে অনুব্রতর গ্রেপ্তারির জবাব দিন, নলহাটির সভায় হুঙ্কার কুণালের]
হাসপাতালে আসা রোগীর আত্মীয়দের অনেকেই বিষয়টি ভালভাবে নেননি। হাসপাতালের মতো জায়গার ভিতরে বক্স বাজিয়ে এমন একটি অনুষ্ঠানের অনুমতি রয়েছে কিনা সেই নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। শেখ সাদ্দাম হোসেন নামের এক চিকিৎসক বলেন, “সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হাসপাতালে থাকতেই পারে। চিকিৎসা চিকিৎসার মত হয়েছে। অনুষ্ঠান অনুষ্ঠানের মত হয়েছে। ইনডোর, আউটডোরে চিকিৎসা পরিষেবায় কোনও ব্যাঘাত ঘটেনি।” নার্স তনুকা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাচের কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, “ভিডিওটি এইভাবে ভাইরাল হবে বোঝা যায়নি। প্রত্যেকবারের মত এবারের অনুষ্ঠানেও আমরা অংশগ্রহণ করি। দু’ঘন্টার অনুষ্ঠান হয়। তবে রোগীদের কোনও অসুবিধা হয়নি।”
বক্স বাজানোর কথা অস্বীকার করার পাশাপাশি অনুষ্ঠানের অনুমতি প্রসঙ্গে তনুকা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আশাদের অনুষ্ঠানে পারমিশন নেওয়া হয় না। বক্স তো সেরকমভাবে বাজেনি। হালকা একটু মোবাইল দিয়ে বাজানো হয়েছিল।” এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ার জন্য হাসপাতালের বিএমওএইচকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।