সুকুমার সরকার, ঢাকা: নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে ইলিশ শিকারের অভিযোগে বাংলাদেশে (Bangladesh) গ্রেপ্তার শতাধিক মৎস্যজীবী। প্রজননের মরশুমে গত রবিবার থেকে ২৫ অক্টোবর, মোট ২২ দিন গোটা দেশে ইলিশ শিকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।
[আরও পড়ুন: ‘এবার কোনও সুন্দরীকে বিয়ে করব’, বিচ্ছেদের নোটিস পেয়েই নয়া পরিকল্পনা নোবেলের]
জানা গিয়েছে, মাদারিপুর জেলার শিবচরে মা ইলিশ শিকারের দায়ে ৩৩ জন মৎস্যজীবীকে ১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। বুধবার রাত তিনটে থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শিবচরের পদ্মা নদীর বিভিন্ন স্থানে ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৯ হাজার ৮০০ মিটার জাল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, গভীর রাত থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও শিবচর থানা-পুলিশের একটি দল পদ্মা নদীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। এ সময় নদীতে নিষেধ অমান্য করে ইলিশ শিকার করার সময় ৩৩ মৎস্যজীবীকে নদী থেকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশ। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের এক বছর করে সাজা দেওয়া হয়। হয়। এ সময় জব্দ হওয়া জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
এদিকে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাজবাড়ি জেলার পদ্মা নদীতে ইলিশ ধরার দায়ে অভিযানের তৃতীয় দিনে ১২ মৎস্যজীবীকে আটকের পর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল-জরিমানা করা হয়েছে। বুধবার চলা অভিযানে তাদের আটক করা হয়। এ সময় রাজবাড়ির সদর উপজেলার আটক ৮ জন মৎস্যজীবীকে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল হুদার ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২০ দিন করে জেল দেওয়া হয়। অন্যদিকে পাংশায় আটক ৪ জন মৎস্যজীবীকে উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুজহাত তাসনীম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে প্রত্যেককে ২ হাজার করে মোট ৮ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এছাড়াও বরিশাল, ভোলা, চাঁদপুর, পটুয়াখালী থেকে অর্ধশত মৎস্যজীবীকে জেল-জরিমানা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ২০০৩-২০০৪ সাল থেকেই খোকা ইলিশ (স্থানীয় ভাষায় জাটকা) রক্ষার কর্মসূচি শুরু করা হয়। তখন থেকেই ধীরে ধীরে ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। ২০০৮ সাল থেকে প্রথম আশ্বিন মাসে পূর্ণিমার আগে ও পরে মিলিয়ে ১১ দিন মা ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তখন থেকেই এর সুফল মিলতে শুরু করে। গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখতে পান, শুধু পূর্ণিমায় নয়, এ সময়ের অমাবস্যাতেও ইলিশ ডিম ছাড়ে। এদিকে আসন্ন দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে ভারতে দুই দফায় পাঁচ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রপ্তানির জন্য দেশের ৫২টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দেয় সরকার।