সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি, সারাদিন আমি যেন ভালো হয়ে চলি। আদেশ করেন যাহা মোর গুরুজনে, আমি যেন সেই কাজ করি ভাল মনে।’ সেই কবে মদনমোহন তর্কালঙ্কার এই ছড়া লিখেছিলেন। যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম মুখে মুখে ফিরেছে। কিন্তু সত্যিই কি আর এমন কথা মেনে চলা যায়? শৈশব যে দুরন্তপনার ছন্দে প্রতিনিয়ত স্পন্দিত হচ্ছে। বড়রা যাই বলুক, সারাক্ষণ সেসব শুনলে চলে নাকি? আজকের দিনে আবার নিউক্লিয়ার পরিবারে মা-বাবারা চট করে গায়ে হাত তুলতে চান না। ফলে সন্তানকে সামলাতে গিয়ে জেরবার হয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। বরং তার জায়গায় নানা রকম ট্রিক ব্যবহার শুরু করছেন তাঁরা। ইন্টারনেটে ভাইরাল (Viral) হওয়া এক অভিনব চুক্তিপত্র সামনে আসতেই সেই ছবি আবারও পরিষ্কার হল।
কী রয়েছে ওই চুক্তিপত্রে? এই চুক্তি হয়েছে এক বছর ছয়েকের পুচকের সঙ্গে তার বাবার। সেই চুক্তি অনুযায়ী, দৈনন্দিন রুটিন মেনে চলা ও কান্নাকাটি, হল্লাহাটি না করার সাপ্তাহিক পুরস্কার হিসেবে ১০০ টাকা দেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে আবির নামের শিশুটির বাবা।
[আরও পড়ুন: চিড়িয়াখানার রক্ষীকে মেরে সঙ্গী সিংহকে নিয়ে চম্পট সিংহীর, আতঙ্ক শহরজুড়ে]
ওই রুটিনে বেঁধে দেওয়া হয়েছে সারাদিনের হিসেব। সকাল ৮টায় ঘুম থেকে ওঠা। তার দশ মিনিট আগে অ্যালার্ম দেওয়া থাকবে। এরপর ব্রাশ করা, স্নান করা থেকে প্রাতঃরাশ থেকে শুরু করে ঘুমোতে যাওয়া- সব কিছুর জন্য়ই বেঁধে দেওয়া হয়েছে সময়। টিভিও দেখা যাবে কেবলই খাওয়ার সময়ে। এছাড়াও রয়েছে কান্না, চিৎকার করা ও গজগজ না করার শর্ত। সব কিছু মেনে চললে মিলবে দৈনিক ১০ টাকা ও সাপ্তাহিক ১০০ টাকা পুরস্কার।
কিন্তু কেন একরত্তিকে টাকা পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত? ওই টুইটেরাত্তি জানাচ্ছেন, প্রথমে তিনি স্টার ও পয়েন্ট সিস্টেম চালু করেছিলেন। কিন্তু দেখা গিয়েছে, ছোট্ট আবির সারা দিন দুষ্টুমি করেও কান্নাকাটি শুরু করছিল স্টার বা পয়েন্ট বেশি পাওয়ার জন্য। তাই এই সিদ্ধান্ত।
ভাইরাল হওয়া এই অভিনব চুক্তিপত্র দেখে অনেকেই মজা পেয়েছেন। আবার অনেকে সমালোচনাও করেছেন। এইটুকু ছেলেকে এভাবে টাকার টোপ দিয়ে কাজ করানোর নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। আবার কারও মতে, এভাবে চাপ দেওয়া হলে আগামিদিনে হয়তো বা ছেলেটি অনিশ্চয়তায় ভুগতে পারে। এখন দেখার, এই নয়া চুক্তি কতটা মেনে চলে একরত্তি আবির। সেজন্য তার বাবার পরের পোস্টের জন্য অপেক্ষা করতেই হবে।