সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১০ বছরে ঘরে ফিরল বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন তরুণ। সৌজন্যে আধার (Aadhaar)। ২০১১ সালে নিঁখোজ হয়েছিল ৮ বছরের ওই বালক। অবশেষে ১৮ বছর বয়সে তার পরিবারের খোঁজ মিলল আধারের সংযোগ সূত্রেই। ঘটনা যেন হার মানায় গল্পকাহিনিকেও।
মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) জবলপুরের বাসিন্দা ছেলেটি পরিবারের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ২০১১ সালে। কিন্তু তার আগেই ছোট ছেলেটির আধার কার্ড তৈরি হয়ে গিয়েছিল। এতদিন পর্যন্ত তরুণের দেখভালের দায়িত্ব ছিল সমর্থ দামলে নামে এক ব্যক্তির উপরে। তিনি একটি অনাথ আশ্রম চালাতেন। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে এবিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘ছেলেটিকে স্টেশনে পাওয়া গিয়েছিল। তখন তার ৮ বছর বয়স। পুলিশই আমাদের অনাথ আশ্রমে নিয়ে আসে পরিত্যক্ত বালকটিকে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন হওয়ায় ভাল করে কথাও বলতে পারত না সে। কেবল ‘আম্মা, আম্মা’ বলতে পারত। সেই কারণেই ওর নাম রাখা হয় আমন।’’
[আরও পড়ুন: OMG! বালি দিয়েই ২১.১৬ মিটার উঁচু প্রাসাদ! তাক লাগালেন নেদারল্যান্ডসের শিল্পী]
২০১৫ সাল পর্যন্ত ওই অনাথ আশ্রমেই রাখা হয়েছিল আমনকে। কিন্তু তারপর সেটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আবারও অসহায় পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয় কিশোর আমনকে। সমর্থর কথায়, ‘‘অনাথ আশ্রমটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে আমন ফের বিপদে পড়ে। কে ওকে দেখভাল করবে। অগত্যা আমি ওকে আমার কাছেই এনে রাখি। আমাদের পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে এই ক’বছর ছিল আমন।’’
নিজের দুই সন্তানের মতো আমনের শিক্ষার ব্যবস্থাও করেছিলেন সমর্থ। এক স্থানীয় স্কুলে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পরই ঘটে আসল ঘটনা। নাম রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রয়োজন ছিল আমনের আধার নম্বরের। কিন্তু যতবারই সেটা করার চেষ্টা করা হয় বায়োমেট্রিক সমস্যার কারণেই তা ব্যাহত হতে থাকে। শেষে নাগপুরের UIDAI অফিসে যান সমর্থ। উদ্দেশ্য, এবিষয়ে যদি কোনও সাহায্য পাওয়া যায়। তখনই বায়োমেট্রিক তথ্য যাচাই করতে গিয়ে দেখা যায়, আমনের নাম ইতিমধ্যেই নথিভুক্ত রয়েছে সেখানে। এবং সেখান থেকেই জানা যায় তাঁর আসল নাম মহম্মদ আমির। খোঁজ মেলে তার পরিবারের।
[আরও পড়ুন: বিয়ের দিন মালাবদলের সময়ই ছেলেকে জুতোপেটা বরের মায়ের, কিন্তু কেন?]
আমন ওরফে আমিরের বাবা-মা খাবারের স্টলের ব্যবসা করেন। হারিয়ে যাওয়া ছেলের খবর পেয়ে দ্রুত তাঁরা নাগপুরে গিয়ে হাজির হন। গত ৩০ জুন বাবা-মার কাছে ফিরে গিয়েছে ওই তরুণ। এতদিন তাকে কাছে রেখে মায়া পড়ে গিয়েছিল সমর্থ ও তাঁর পরিবারের। তবুও শেষ পর্যন্ত সে যে তার আসল অভিভাবকদের কাছে ফিরতে পেরেছে তাতেই খুশি তাঁরা।