অর্ণব দাস, বারাসত: জঙ্গল নয়। মাদ্রাসার সামনে হেঁটে বেড়াচ্ছে তিন-তিনটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। তাদের দেখে আতঙ্কে হুড়োহুড়ি করছে পড়ুয়ারা। তবে সবচেয়ে অবাক করা কাণ্ড হল ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনা দত্তপুকুরের কদম্বগাছি পঞ্চায়েত এলাকার। ওই এলাকায় দক্ষিণরায়? এ-ও কী সম্ভব? ভাইরাল ভিডিও এই প্রশ্ন মনে জাগে ঠিকই। তবে বারবার ভিডিও দেখে আঁতকে উঠেছে উলা কালসারা কাদরিয়া হাইমাদ্রাসার পড়ুয়ারা। গায়ে যেন কাঁটা দিচ্ছে তাদের। তাই স্কুলমুখো হতে চাইছে না আর।
সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিওটি স্বাভাবিকভাবে তা নজর এড়ায়নি অভিভাবকদের। আর তারপর থেকে একের পর এক ফোন পাচ্ছেন মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মনিরুল মল্লিক। ফোনে একটাই প্রশ্ন, সত্যি কি বাঘ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে স্কুলে? প্রধানশিক্ষক মনিরুল মল্লিক বলেন, "ভিডিওটি ভূগোলের সহশিক্ষক মহম্মদ ইয়ামিন মল্লিক তৈরি করেছেন। ভিডিওটি সম্পূর্ণ AI প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি।" তবে কোন উদ্দেশ্যে তিনি তৈরি করেছেন তা প্রতিষ্ঠানের কাছে স্পষ্ট নয় বলেই জানান প্রধানশিক্ষক। তিনি আরও বলেন, "অভিভাবকদের কাছ থেকে ফোন আসতেই ভূগোল শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলি। ভিডিওটি ডিলিট করানো হয়েছে।"
যিনি ভিডিওটি তৈরি করেছেন, সেই ভূগোল সহশিক্ষক মহম্মদ ইয়ামিন মল্লিক বলেন, "পাঠ্যবইয়ের বাইরে ছাত্রছাত্রীদের জানানোর ইচ্ছা ছিল আমার। তাই AI প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে তিনটি বাঘ নিয়ে আসি প্রতিষ্ঠানের ফাঁকা বারান্দায়। এবং ছাত্রছাত্রীদের বোঝানোর চেষ্টা করি, তারা সমাজমাধ্যমে যা দেখছে তার সবকিছুই আদতে সত্যি নয়।" তিনি আরও বলেন, "প্রযুক্তি শিক্ষা বিলোতে গিয়েই আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সে কারণে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। বিদ্যালয়ের কোথাও এই ধরনের বাঘ বা অন্য কোন প্রাণীর উপদ্রব নেই।" তিনি অভিভাবক ও গ্রামবাসীদের উদ্দেশে আরও বলেন, "আতঙ্কে না থেকে বোঝার চেষ্টা করুন, ভিডিওটি ভুয়ো।" ছাত্রছাত্রীদের আবার স্কুলে পাঠানোর অনুরোধ জানান শিক্ষক। তাঁর কথার পরেও যেন আতঙ্ক দূর হচ্ছে না। এখনও স্কুল যাওয়ার কথা ভেবে ভয়ে কাঁটা খুদেরা।
