সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'শোলে' ছবিতে জয় ও বীরুর সেই গান মনে পড়ে? 'ইয়ে দোস্তি' গানে দুই বন্ধুর বাইক সফর স্মরণীয় হয়ে রয়েছে আজও। ইন্টারনেটে এই মুহূর্তে এমনই দুই বন্ধুর বাইক সফর ভাইরাল হয়েছে। একটু ভুল বলা হল। বন্ধু নয়, বান্ধবী। আর তাঁরা দু'জনই অশীতিপর। কিন্তু জীবনীরসে ভরপুর তাঁদের যাপন। ৮৭ বছরের মন্দাকিনী থাকেন আহমেদাবাদে। তিনি তাঁর পিঠোপিঠি বোনকে নিয়ে চালাচ্ছেন স্কুটার। স্কুটারের সহযাত্রী বসেছেন পাশের মোপেডে। ঠিক জয়-বীরুর বাইকের মতোই। নেট ভুবন তাঁদের নাম দিয়েছে 'বাইকার দাদিজ'!
আসলে 'বয়স হলে কেন প্রেমে এত পাক ধরে' এই নিয়ে সকলেই চিন্তিত নয়। কেউ কেউ বয়সকে তুড়ি মেরে প্রাণপণে বাঁচতে জানে। মন্দাকিনী শাহও তেমনই একজন। তাঁর বোন ঊষাও তাঁরই মতো। তাই সফরসঙ্গী হয়ে উঠতে জানেন। 'হিউম্যানস অফ বম্বে'-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মন্দাকিনী খুলে বলেছেন তাঁর জীবনের কথা।
তিনি জানিয়েছেন, ''বোনের সঙ্গে অ্যাডভেঞ্চারে যেতে দারুণ লাগে। সঙ্গী থাকে আমাদের এই বিশ্বস্ত এই স্কুটার। পাঁচ বোন ও এক ভাই আমরা। একসঙ্গে বেড়ে উঠেছি আহমেদাবাদে। আমিই ছিলাম বড়। তাই জীবন আমাকে শিক্ষা দিয়েছে দায়িত্ব কেমন করে নিতে হয়। আমি কলেজে যেতে পারিনি। স্কুল শেষ করেই চাকরি করতে শুরু করি। ১৬ বছরেই বাল মন্দিরে মন্টেসরি শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দিই। ইংরেজি ভালো জানতাম না। কিন্তু জানতাম কাজটা মন দিয়ে করতে হবে।''
পরবর্তী সময়ে নানা কল্যাণকর প্রকল্পেও যোগ দিয়েছিলেন তিনি। মহিলা মণ্ডল, পঞ্চায়েতের বৈঠক, মহিলাদের তাদের অধিকার বোঝানো... আর এসবের জন্য মাইলের পর মাইল মোপেডেই চলাফেরা। তাঁর কথায়, ''প্রথমে মোপেড চালাতাম। তারপর গাড়ি। এরপর কিনে ফেলি সেকেন্ড হ্যান্ড স্কুটার।''
বিয়ে করেননি। অনেকে মনে করতেন তিনি বিধবা। কিন্তু মন্দাকিনী কখনওই কারও সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেননি। বরং ভেসে গিয়েছেন জীবনস্রোতে। সেই বহমানতা আজও জারি। ট্র্যাফিক পুলিশ নাকি অবাক হয়ে জানতে চান, ''বাবা রে, আপনি কেন স্কুটার চালাচ্ছেন?'' জোটে ব্যাঙ্গও। কিন্তু মন্দাকিনীকে টলানো যায় না। বলছেন ৮৭-র 'কিশোরী', ''লোকে আমাকে আর ঊষাকে দেখে অবাক হয়ে যায়। আমি হাসি। কিছু বলি না। কী করে বোঝাই স্কুটারে যাওয়ার সময় চলন্ত বাতাস কীভাবে মুখে খেলা করে! নিজেকে ১৬ বছরের মেয়ে মনে হতে থাকে। বয়স আমাকে শ্লথ করেছে ঠিকই। কিন্তু আমি কাজ করতে, ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসি। আজও।''
