সুমন করাতি, হুগলি: মানুষের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন। নিজের স্বাস্থ্যও ভালো রাখেন। পাশাপাশি সচেতনতা বাড়াতে গলায় স্টেথোস্কোপ ঝুলিয়ে রক্তচাপও মেপে বেড়ান। তিনি প্রাক্তন নৌসেনা কর্মী মলয় বসু। যাঁকে মাঝে মধ্যেই দেখা যায় স্টেথোস্কোপ নিয়ে হুগলি সদর চুঁচুড়ায় ঘুরতে।
জানা গিয়েছে, ৭২ বছরের এই বৃদ্ধ উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগরের বাসিন্দা। বর্তমানে থাকেন বারাকপুরে। কখনও চলে যান ক্যানিং বনগাঁ, কৃষ্ণনগর বেথুয়াডহরী আবার কখনও বর্ধমান। কখনও আবার তাঁকে দেখা যায় হুগলিতে। গলায় ঝোলে স্টেথোস্কোপ আর হাতে থাকে রক্তচাপ মাপার যন্ত্র, পালস অক্সিমিটার। নৌসেনায় চাকরির সুবাদে ফিজিওথেরাপি এবং নার্সিং ট্রেনিং নিয়েছিলেন মলয়বাবু। পনেরো বছর চাকরি করে ১৯৮৮ সালে অবসর নেন। তারপর সৌদি আরবে কয়েক বছর চাকরি করেন। এরপর গত দশ বছর ধরে ঘুরে ঘুরে মানুষের ব্লাড প্রেসার মেপে বেড়াচ্ছেন। দশ টাকা নেন প্রেসার মাপতে। সঙ্গে পাঁচ টাকা পালস অক্সিমিটারে অক্সিজেন স্যাচুরেশান মাপার জন্য।
আসলে রক্তচাপ কমলে বা বাড়লে শারীরিক অসুস্থতা বোঝা যায়। সেই বিষয়টাই অনেকে অবহেলা করেন। তাই প্রেসার মেপে মানুষকে সতর্ক করতে এই উদ্যোগ নিয়েছেন মলয়বাবু। কারও প্রেসার কম-বেশি দেখলে তাঁকে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন। দিনে পাঁচ-ছঘন্টা কাজ করে ৫০-৬০ জনের প্রেসার মাপেন।
মলয়বাবুর কথায়, তিনি পেনশন পান। তবু এই কাজ করেন কারণ নিজে একটা কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন। পাশাপাশি মানুষকে শরীর স্বাস্থ্য সম্বন্ধে সচেতন করতে পারেন। এভাবেই সামাজিক কাজ করার পাশাপাশি বিজ্ঞান আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং শ্রমজীবী স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে আর্থিক সাহায্য করার জন্য এই পথ তিনি বেছে চান। তিনি যা আয় করেন তার তিন ভাগের দুই ভাগ দান করে দেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, অনেক সময় কাজের চাপে ডাক্তারের কাছে বা ওষুধের দোকানে গিয়ে প্রেসার মাপা হয়ে ওঠে না। কিন্তু ব্লাড প্রেসার নিয়মিত মাপা ভালো। যেটা মলয়বাবু এলে তাঁর থেকে মাপিয়ে নেওয়া যায়।