shono
Advertisement
Farakka

খোলা আকাশের নিচেই পড়াশোনা, ফরাক্কার আদিবাসী গ্রামে কমলার পাঠশালায় শিক্ষার আলো

এখন ৪৫ জন পড়ুয়া রয়েছে তাঁর পাঠশালায়।
Published By: Suhrid DasPosted: 04:12 PM Nov 24, 2025Updated: 08:30 PM Nov 24, 2025

শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম। দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়ার তেমন চলও নেই! মুর্শিদাবাদ জেলার ঝাড়খণ্ড লাগোয়া ফরাক্কা (Farakka) ব্লকের ফিডার ক্যানালের পশ্চিম পাড়ের বাহাদুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এই বারোমাসিয়া গ্রামে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে এগিয়ে এসেছেন কমলা মাড্ডি নামে এক গৃহবধূ। রীতিমতো বাড়ির আঙিনায় ‘পাঠশালা’ খুলে ছোট্ট ছেলেমেয়েদের পাঠদান করছেন কমলা দিদিমণি। এখন ৪৫ জন পড়ুয়া রয়েছে তাঁর পাঠশালায়। রোজ বিকেলে বসে পাঠশালা। অলচিকি থেকে সাঁওতালি এমনকী বাংলা ভাষার পাঠদান করেন কমলাদেবী। আদিবাসী সমাজে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে নিরন্তর বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করে চলেছেন তিনি।

Advertisement

ফরাক্কা (Farakka) ব্লকের বাহাদুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বারোমাসিয়া গ্রামের বাবুজি টুডু। পাথর ভাঙার কাজ করেন। ২০১১ সালে বাবুজি টুডুর বিয়ে হয় বীরভূম জেলার রাজনগর জিতুপুর গ্রামের যুবতী কমলা মাড্ডির। গ্রামের পুরুষ ও মহিলারা অধিকাংশ পাথর ভাঙা, ধান কাটার কাজে নিযুক্ত শ্রমিক। কমলা মাড্ডি গ্রামের একমাত্র উচ্চ মাধ্যমিক পাশ গৃহবধূ। সংসার চালাতে কমলাদেবীও মাঝে মাঝে স্বামীর সঙ্গে পাথর ভাঙা ও ধান কাটার কাজেও হাত লাগান। তাঁদের দুই কন্যা। বড় মেয়ে নবগ্রাম থানার চাণক্যে হোস্টেল থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। ছোট মেয়ে স্থানীয় একটি বেসরকারি স্কুলে নার্সারিতে পড়ে। গ্রামে পড়াশোনার চল সেই অর্থে না থাকায় কমলা মাড্ডি সিদ্ধান্ত নেন, এলাকার ছেলেমেয়েদের নিজেই পড়াবেন। গ্রামের বাসিন্দাদের নিজের মনের কথাও জানান। গ্রামবাসীরা সাফ জানান কোনও রকম পারিশ্রমিক দিতে পারবেন না।

পরে গ্রামবাসীদের সম্মতি পেয়ে ২০২৪ সালের ৬ জানুয়ারি বাড়ির আঙিনায় খোলা আকাশের নিচে শুরু করেন এই অবৈতনিক পাঠশালা। এক দুই থেকে এখন ৪৫ জন ছাত্রছাত্রী রোজ বিকেলে ওই পাঠশালায় শিক্ষা নিতে আসে। কমলা মাড্ডি বলেন, “গ্রামের শিশুদের পাঠদান করা হয়। শিশুরা শিক্ষার সঠিক জ্ঞান অর্জন করলে সমাজের অগ্রগতি ঘটবে।” বাহাদুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বাদিরুদ্দিন শেখ বলেন, “আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে কমলা মাড্ডির অবদান অনস্বীকার্য। পিছিয়ে পড়া সমাজের একজন শিক্ষিত প্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করে তিনি এগিয়ে এসেছেন। এটা অন‌্যদের কাছেও অনুপ্রেরণার।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম। দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়ার তেমন চলও নেই!
  • বারোমাসিয়া গ্রামে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে এগিয়ে এসেছেন কমলা মাড্ডি নামে এক গৃহবধূ।
  • রীতিমতো বাড়ির আঙিনায় ‘পাঠশালা’ খুলে ছোট্ট ছেলেমেয়েদের পাঠদান করছেন কমলা দিদিমণি।
Advertisement