রাজা দাস, বালুরঘাট: আক্ষরিক অর্থেই বামন। উচ্চতা মেরেকেটে আড়াই ফুট। খর্বকায় চেহারার জন্য জীবনসঙ্গীও পাওয়া যাচ্ছিল না। উচ্চতায় ছোট, কিন্তু আকাশ তো বড়। চার হাত এক হল বালুরঘাটের দীপঙ্কর ও আসানসোলের নন্দীনির।দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দা দীপঙ্কর বর্মণের বিবাহ হচ্ছিল না যথাযথ পাত্রী না মেলায়। শেষপর্যন্ত পাত্রী মিলল। আসানসোলের বাসিন্দা নন্দিনী কর। সমাজমাধ্যমে আলাপের মধ্যে দিয়েই বিবাহের প্রস্তাব। সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন নন্দিনী। আর তারপরই বাজল সানাই। চার হাত এক হল দু'জনের। নন্দিনীও খর্বকায়, উচ্চতা তিন ফুট। বিবাহের পর সংসারও সাজিয়ে নিয়েছেন দু'জনে।
জানা গিয়েছে, আমতলির বাসিন্দা পেশায় বাজনা বাদক বছর ২৫-এর দীপঙ্কর বর্মণ। স্বল্প উচ্চতাই একসময় তাঁর স্বাভাবিক জীবনে বাঁধ সেধেছিল। সংসার বাধার ইচ্ছা থাকলেও তা সম্ভব হচ্ছিল না যোগ্য পাত্রীর অভাবে। অবশেষে ফেসবুকে আলাপ আসানসোলের বাসিন্দা চণ্ডীকর মোদকের মেয়ে নন্দিনী কর মোদকের সঙ্গে। স্বাভাবিক কথাবার্তা থেকে ভিডিও কল। সেখানে তাঁরা যেন একে অপরের যোগ্য হিসেবেই মিলে যান। পরিবারের সন্মতিতে মাসখানেক আগে তাঁরা বিয়ে সেরেছেন। আর ওই নবদম্পতিকে দেখতে বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন বাসিন্দারা। দিন আনা দিন খাওয়ার মতো আর্থিক অনটন নিত্যসঙ্গী। তার মধ্যেই মানিয়ে গুছিয়ে সংসার সামলাচ্ছেন দু'জনে। একে অপরকে জীবনসঙ্গী পেয়ে সুখী দু'জনেই।
দীপঙ্কর জানিয়েছেন, অন্যদের মতো তাঁরও ইচ্ছে ছিল বিয়ে করে সংসার পাতার। কিন্ত তাঁর মতো পাত্রী পাওয়াটাই দুস্কর হয়ে দাঁড়িয়েছিল। অবশেষে ফেসবুকেই আলাপের পরে যেন ঘুরে যায় জীবনের মোড়। একে অপরকে পেয়ে এখন তাঁরা সুখী। নন্দিনী জানান, তাঁর এমন স্বল্প উচ্চতা নিয়ে প্রথম থেকেই দুশ্চিন্তায় ছিল পরিবার। কিন্ত দীপঙ্কর এভাবে জীবনে এসে পড়বে, তা কল্পনাতেও আসেনি। ফেসবুকে পছন্দের পরেই বাড়িতে জানানো। বাবা-মা আসানসোল থেকে দীপঙ্করের বাড়িতে যান। সব কিছু দেখেশুনে বিয়ের জন্য দুই পরিবার রাজিও হয়ে যায়। এরপরেই নির্দিষ্ট দিনে আসানসোলে গিয়ে দীপঙ্কর বিয়ে করেন নন্দিনীকে। এরপর আমতলি গ্রামে স্ত্রীকে নিয়ে ফেরেন দীপঙ্কর। দু'জনে ভালোভাবে সংসার করুক, এই প্রার্থনা, শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন প্রতিবেশীরা।
