সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মা হওয়ার কি বয়স আছে? চিকিৎসাবিজ্ঞান বলবে, হ্যাঁ, আলবাত আছে। একটা বয়সের পর নারীরা সন্তান ধারণের ক্ষমতা হারান। এ প্রকৃতিরই লীলা! কিন্তু প্রকৃতি কার জন্য কোন উপহার তুলে রেখেছে, তা বলা কঠিনই নয়, অসম্ভব। নইলে ৬৬ বছর বয়সেও মা হওয়ার সুখানুভূতি পাওয়া যায়, জার্মানির আলেকজান্দ্রার কাহিনি না শুনলে তা কি বোঝা যেত? মোটেই না। কিন্তু পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য ঘটনার মতোই আলেকজান্দ্রা আবার মা হলেন এ মাসেই। কোলে এল দশম সন্তান। চিকিৎসকরা বলছেন, কোনও কৃত্রিম উপায় নয়, স্বাভাবিকভাবেই সুস্থ-সবল এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন আলেকজান্দ্রা হাইল্ডব্র্যান্ট। এ বিরলের মধ্যেও বিরলতম ঘটনা বইকী!

জার্মানির বার্লিনের একটি মিউজিয়ামের ডিরেক্টর ৬৬ বছরের আলেকজান্দ্রা হাইল্ডব্র্যান্ট। দশ সন্তানের মা। বড়সড় সংসার সামলেও দিব্যি চালাচ্ছেন কাজকর্ম। এতেই বিশ্বাসী আলেকজান্দ্রা। গত ১৯ মার্চ তিনি এক ফুটফুটে পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। বাচ্চাটি বেশ স্বাস্থ্যকরও। তার ওজন ৭ পাউন্ড ১৩ আউন্স। নাম তার ফিলিপ। তাকে কোলে নিয়ে বাড়ি ফিরে দারুণ খুশি বছর ছেষট্টির মহিলা। বলছেন, ''বড় পরিবার শুধু আনন্দই দেয় না, আমার মনে হয়, ছেলেমেয়েরা খুব ভালোভাবে মানুষ হতে পারে।'' আলেকজান্দ্রার বড় সন্তানের বয়স ৪৬ বছর। আর ছোটটি মাত্র দু'বছরের। তারই মধ্যে কোলে এল দশম সন্তান। বড় সন্তানের সঙ্গে তার বয়সের তফাৎ হয়ে গেল প্রায় পাঁচ দশক!
আসুন, আলেকজান্দ্রার সন্তানদের সঙ্গে আলাপ করা যাক - বড় সন্তান স্বেতলানা ৪৬ বছরের, এরপর আর্তিওমের ৩৬ বছর। আর্তিওমের পর যমজ সন্তান এলিজাবেথ আর ম্যাক্সিমিলিয়ান ১২ বছরের। আলেকজান্দ্রা জুনিয়র ১০ বছরের, তার চেয়ে দু'বছরের ছোট লিওপোল্ড। এরপর ৭ বছরের অ্যানা, মারিয়ার বয়স ৪ বছরের, ক্যাথরিনার বয়স ২ আর সদ্যোজাত ফিলিপ মাত্র ১১ দিনের।
কিন্তু কোন ম্যাজিকে ছেষট্টিতেও সিজারিয়ান পদ্ধতিতে মা হলেন আলেকজান্দ্রা? চিকিৎসকরা কিন্তু এ বিষয়ে বেশ ইতিবাচক কথাবার্তা বলছেন। তাঁর ডাক্তার উলফগ্যাং হেনরিখ জানিয়েছেন, ''গর্ভাবস্থায় আলেকজান্দ্রার মতো সুস্থ মহিলা আগে দেখিনি। উনি এত ভালোভাবে এই সময়টা উপভোগ করেছেন আর নিজের প্রতি যত্ন নিয়েছেন, তা শেখার মতো। শারীরিক, মানসিক অবস্থা দারুণ ছিল ওঁর। আমরা তো সবাইকে আলেকজান্দ্রার উদাহরণ দিই।'' আর এমন অসাধ্য সাধন করে ৬৬ বছরের সদ্য মা বলছেন, ''নিজেকে খুব সক্রিয় রাখি। কাজেকর্মে আর মনে মনে আমি সুস্থ থাকার চেষ্টা করি। কোনওদিন গর্ভনিরোধক ওষুধ খাইনি। যখনই অন্তঃসত্ত্বা হয়েছি, তা স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করে সন্তানের জন্ম দিয়েছি।'' হয়ত সেই কারণেই এখনও মা হওয়ার মতো সুস্থ তিনি।