সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছোটবেলা থেকে একে অপরকে ভালোবাসতেন গুজরাটের বাসিন্দা হর্ষ এবং মৃণু। কিন্তু সমাজের ভয়ে মুখে আনতে পারতেন না সে কথা। আন্তঃবর্ণ বিয়ের কথা ভাবাও অপরাধ ছিল সেকালে। এই অবস্থায় বাধ্য হয়ে এক সময় বাড়ি ছেড়ে পালান ওঁরা। বিয়েও করেন। সংসার পাতেন। ছেলেমেয়ে হয়। দায়িত্ববান মা-বাবার মতোই তাঁদের বড় করে তোলেন। সময় তো ম্যাজিক! এর মধ্যেই কেটে গিয়েছে ৬৪ বছর। অবশেষে সম্প্রতি দ্বিতীয়বার সমাজ স্বীকৃত বিয়ে সারলেন হর্ষ এবং মৃণু। এমন কাণ্ড প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে গিয়েছে। ভাইরাল হয়েছে অভিনব এই বিয়ের ভিডিও।

আজকের বৃদ্ধ ও বৃদ্ধাকে সুখের মুহূর্ত ফিরিয়ে দিল তাঁদের পরিবার। সন্তান ও নাতি-নাতনিরা হর্ষ ও মৃণুর 'স্বপ্নের বিয়ে'র ব্যবস্থা করেছিল। যাঁরা ৬৪ বছর আগে ভালোবাসার টানে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিলেন। জাত-বর্ণের ঊর্ধ্বে হৃদয়কে জিতিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁদের মনে একটাই আক্ষেপ ছিল, আর পাঁচজনের মতো তাঁদেরও যদি ধুমধাম করে সামাজিক বিয়ে হত! সেই ইচ্ছেই পূর্ণ হল সাড়ে ছয় দশক পরে। এবার ধুম-ধাম করে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হলেন বৃদ্ধ দম্পতি। স্বপ্নের সেই বিয়ের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে ইনস্টাগ্রামে। যেটি পোস্ট করা হয়েছে ‘দ্য কালচার গালি’ নামের একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, হর্ষের সঙ্গে প্রেমের বিষয়টি জানাজানি হতেই মৃণুর পরিবার জানিয়ে দেয়, ভিন্ন ধর্মের ছেলের সঙ্গে বিয়ে অসম্ভব। এরপরেই পালানোর সিদ্ধান্ত নেন দুজনে। এক বন্ধুর কাছে একটি চিরকুট দিয়ে সকলের অলক্ষ্যে বাড়ি ছাড়েন তাঁরা। ওই চিরকুটে লেখা ছিল "আমি আর ফিরে আসছি না।" অভিনব বিয়ের নেপথ্য কাহিনি ইনস্টাগ্রাম ভিডিওর ক্যাপশানেও লেখা হয়েছে---“হর্ষ এবং মৃণু ছিলেন ভিন্ন ধর্মের ছোটবেলার বন্ধু। পরিবার তাঁদের বিয়ের বিরুদ্ধে ছিল। ১৯৬০-এর দশকে প্রেমের বিয়ে চল ছিল না। তাঁরা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন। একসঙ্গে জীবন গড়ে তোলেন। আজ, তাঁদের পরিবার, নাতি-নাতনিরা, সন্তানরা তাঁদের সুন্দর অনুষ্ঠান করে বিয়ে দিয়েছে। মৃণু এবং হর্ষের স্বপ্ন ছিল এই বিয়ে।”
হর্ষ ও মৃণুকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বহু নেটিজেন। অভিনব বিয়ের আয়োজনের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাঁদের সন্তান ও নাতি-নাতনিদের। এক নেটিজেন লিখেছেন, “কী অসাধারণ প্রেমের গল্প। এই অসাধারণ দম্পতির আরও অনেক বছরের ভালোবাসা এবং সুখ কামনা করছি।”